বোর্ডের বৈঠকে বিরোধীরা এক প্রশ্ন করলে জবাব মেলে আর এক— এমনই অভিযোগে ক্ষোভপ্রকাশ করে শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড বৈঠক থেকে ‘ওয়াক-আউট’ করলেন সিপিএম কাউন্সিলরেরা। বুধবার পুরবোর্ডের বৈঠক থেকে বার হওয়ার আগে তাঁরা জানিয়েও দেন, ভবিষ্যতে বোর্ডের সভায় আসবে কি না, তা ভাববেন।
এ দিন বোর্ড বৈঠকে সিপিএমের পরিষদীয় নেতা মুন্সি নুরুল ইসলাম অভিযোগ তোলেন, শহরের বহুতল, ফ্ল্যাটগুলিতে ‘অকুপেন্সি সার্টিফিকেট’ ছাড়াই অনেকে বসবাস করছেন। তার জেরে পুরসভার রাজস্ব আদায় কমছে। ওই শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। তা ছাড়া, নতুন নির্মাণের ক্ষেত্রে গাছ লাগানো, বৃষ্টির জল ধরে রাখার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে না। ফলে শিলিগুড়ির উন্নয়ন, পরিবেশ সমস্ত কিছু নিয়েই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
মেয়র গৌতম দেব উত্তর দিলেও তিনি অন্য বিষয়ের কথা বলে আসল জবাব এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে সিপিএমের প্রতিনিধিরা অভিযোগ তোলেন। ফের নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘বোরোগুলিতে কোনও বৈঠকও করা হচ্ছে, কাজও হচ্ছে না। মাঝে বালি-পাথর তোলা নিয়ে সমস্যা শুরু হয়। ঠিকাদারেরাও কাজ করতে চাইছেন না।’’ মেয়র তার উত্তরে বক্তব্য রাখার সময় ওয়াক-আউট করে বেরিয়ে যান সিপিএমের চার কাউন্সিলর।
মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘ওঁরা ভুল অভিযোগ করছেন। শহরের উন্নয়ন নিয়ে উনি প্রশ্ন তুলছেন। তাই কী হয়েছে সেটা জানানো হল। আমরা সমস্ত কাজের নথিপত্র রাখছি। আগে তা করা হত না। অথচ তাঁরা শুনবেন না বলে বেরিয়ে গেলেন।’’
পাল্টা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট করে প্রশ্ন করলেও উত্তর দেওয়ার সময় ঘুরিয়ে অন্য কিছু বলা হচ্ছে। আসল উত্তর মিলছে না। তাই আমরা ওয়াক-আউট করেছি। এ রকম হলে ভবিষ্যতে বোর্ডের সভায় যাব কি না, তা ভাবতে হবে।’’
সিপিএম কাউন্সিলরেরা বৈঠক থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরে মেয়র তাঁর বক্তব্য বলতে থাকলে বিরোধী দলনেতা অমিত জৈন বলেন, ‘‘যাঁরা প্রশ্ন করেছিলেন, তাঁরা চলে গিয়েছেন এখন উত্তর শোনার লোক নেই। আপনি লিখিত ভাবে তাঁদের জানিয়ে দিন।’’
এ দিন সভায় যে সমস্ত সিদ্ধান্ত পাশ হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, শহরে বিভিন্ন দোকানের ‘সাইন বোর্ড’ বাংলায় লেখা বাধ্যতামূলক। তা বণিকসভাগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে শহরের প্রবেশপথ এবং বার হওয়ার পথগুলিতে নজর ক্যামেরা বসানো হবে। রাতে ওষুধ পেতে পুরসভার মাতৃসদনে ওষুধের দোকান ২৪ ঘন্টা খোলা রাখার জন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বর্ধমান রোডের উড়ালপুল মে মাসে চালু করা হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)