E-Paper

জল নামতেই জেগে উঠছে নষ্ট শস্য, শোক 

শুক্রবার দুপুরে ভাতের সঙ্গে সয়াবিনের ঝোল রান্না হয়েছিল ত্রাণশিবিরে। রংধামালি বিএফপি প্রাথমিক স্কুলের মিড-ডে মিলের রান্নাঘরে বড় কড়াই, গামলায় রান্না হচ্ছে বন্যাদুর্গতদের খাবার।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৩৬
তিস্তার জলে বিধ্বস্ত সিকিম।

তিস্তার জলে বিধ্বস্ত সিকিম। —নিজস্ব চিত্র।

পুজোর আগে তিস্তার দুই পাড়ে জমিহারা, ঘরহারাদের হাহাকার ছড়াচ্ছে। জল যত নামছে, ততই ক্ষয়ক্ষতির চেহারা ফুটে উঠছে। নদীর জল সরে যাওয়ার পরে পলি সরিয়ে বাসিন্দারা দেখছেন, ধানগাছ নুয়ে পড়েছে। কারও ঘরের চারটে বেড়ার দেওয়ালই ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে তিস্তা নদী। গত বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির রংধামালির যে ত্রাণশিবিরে রাজ্যপাল পরিদর্শনে এসেছিলেন, সেখানে শুক্রবারও দুর্গতেরা ছিলেন। জল কমে গেলেও যাওয়ার জায়গা নেই তাঁদের।

শুক্রবার দুপুরে ভাতের সঙ্গে সয়াবিনের ঝোল রান্না হয়েছিল ত্রাণশিবিরে। রংধামালি বিএফপি প্রাথমিক স্কুলের মিড-ডে মিলের রান্নাঘরে বড় কড়াই, গামলায় রান্না হচ্ছে বন্যাদুর্গতদের খাবার। কোনও বেলা ভাত, কোনও বেলা খিচুড়ি। আনারানি বিশ্বাস ত্রাণশিবিরে আসার সময় কিছুই আনতে পারেননি। বললেন, ‘‘যে শাড়িটা পরে রয়েছি, সেটাই শুধু আছে। কত দিন এখানে থাকতে দেবে, জানি না!’’ প্রথম দিনের চেয়ে কিছু লোক কমলেও এ দিনও দু’শোর কাছাকাছি বাসিন্দা ছিলেন রংধামালির শিবিরে। তাঁদেরই এক জন হরিপদ বিশ্বাস বললেন, ‘‘নদীর চরে বাড়ি ছিল। পুরো বাড়ি ভেসে গেল। যাব কোথায়! শিবির ছাড়া আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই!’’ জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণশিবির চলছে। সেখানে রয়েছেন, তাঁদের কারও দরমা-বেড়ার বাড়ি ভেসে গিয়েছে, কারও পাকা বাড়ির ঘরে থকথকে কাদা।

তিস্তার পাড়ের জমিতে ধানচাষ হয়েছিল। বিঘার পর বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়েছে। পাট কেটে রাখা ছিল। পাট ভেসে গিয়েছে। কোথাও জলদি মরসুমের আলু লাগানো হয়েছিল। সে আলু নষ্ট হয়েছে। কৃষি দফতরের প্রাথমিক অনুমান, অন্তত দু’হাজার বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। কৃষি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ধানেরই ক্ষতি বেশি হয়েছে। সব ব্লক থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।’’

জলপাইগুড়ির রংধামালি, ক্রান্তি, মিলনপল্লির চরে দুর্গাপুজো হয়। কোথাও কোথআও মণ্ডপের বাঁশ বাঁধাও শুরু হয়েছিল। সেখানেও বন্যার জল ঢুকেছিল। শুক্রবার বৃষ্টি হয়নি জলপাইগুড়িতে। রোদে চকচক করেছে নদীতীরের কাশবন। তার পাশেই পড়ে ছিল পলিমাখা নষ্ট ফসল, বসতবাড়ির ভাঙা দরমা-দেওয়াল।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

sikkim Teesta River

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy