E-Paper

রংপোর কাছে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেড়ে সাত

তিস্তার খাদে শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটকগামী বাস দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল সাত জন। রবিবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ গ্যাংটকের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বিহারের কিসানগঞ্জের বাসিন্দা জামিরুদ্দিন আনসারি।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৬
দুর্ঘটনাস্থল থেকে তোলা হচ্ছে বাস।

দুর্ঘটনাস্থল থেকে তোলা হচ্ছে বাস। নিজস্ব চিত্র।

শিলিগুড়ি থেকে সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের ‘স্পর্শকাতর’ বাঁক এবং এলাকাগুলির সুরক্ষা ব্যবস্থা ঠিকঠাক না থাকার দরুণই কি বাস দুর্ঘটনা ঘটল? এ বার সেই প্রশ্ন উঠল। গত বর্ষার মরসুম থেকে জাতীয় সড়কটির বহু অংশ বেহাল হয়ে পড়েছে। শনিবারের রংপোর কাছে দুর্ঘটনাস্থলটির রাস্তার একাংশ আগেই তিস্তার খাদে বসে গিয়েছিল। রাস্তাটিও সেখানে সংকীর্ণ হয়ে রয়েছে। খাদের দিয়ে বেশ কিছু মিটার অংশ নেই। তাতেই চালক গতিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যান কি না পুলিশ এবং প্রশাসনের তরফে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিস্তার খাদে শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটকগামী বাস দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল সাত জন। রবিবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ গ্যাংটকের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বিহারের কিসানগঞ্জের বাসিন্দা জামিরুদ্দিন আনসারি। গত শনিবার দুর্ঘটনাস্থল থেকে দুটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। আরও চার জনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এক জনের পরিচয় মেলেনি। রাজ্য সরকার এ রাজ্যের মৃতদের পরিবারকে দুই লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রবিবার এলাকায় যান কালিম্পঙের জেলাশাসক বালসুব্রহ্ম্যণ্যন টি। তিনি বাসটিকে ক্রেনের সাহায্য তিস্তার খাত থেকে তুলে আনার সময় বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখেন। জেলাশাসক বলেন, ‘‘আমি এলাকাটি পুলিশ এবং পরিবহণ দফতরের অফিসারদের নিয়ে ঘুরে দেখেছি। রাস্তার কিছু অংশ অতিরিক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন কি না দেখা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, আজ, মঙ্গলবার পুলিশ-প্রশাসন, পরিবহণ এবং পূর্ত দফতরের দল বিভিন্ন ভয়ানক পাহাড়ি বাঁক এবং স্পর্শকাতর এলাকাগুলি ঘুরে দেখবেন।

দুর্ঘটনায় ১৬ জন আহত হয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, এঁদের মধ্যে দু’জনকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় মণিপালের হাসপাতালের পাঠানো হয়েছে। বাকিদের সিংতাম এবং গ্যাংটকের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। চালকের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। তার সঙ্গেও কথা বলার চেষ্টা চলছে।

গতকাল মৃত ইন্দ্রজিৎ সিংহের পকেটে শিলিগুড়ির ঠিকানার আধার কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্স মেলে। পরে খোঁজখবর নিয়ে তাঁর পরিবারে নম্বর জোগাড় করে পুলিশ। দেখা যায়, পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান ইন্দ্রজিৎ শিলিগুড়িতেও থাকতেন। তাঁর স্ত্রী মেঘালয়ের শিলং থেকে জানান, কর্মসূত্রে শিলিগুড়ি, সিকিম বিভিন্ন এলাকায় ইন্দ্রজিৎ ঘুরতেন। একই ভাবে পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান ছিলেন জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা সুজিত দাসও। প্রথমে উদ্ধার না হলেও পুলিশ খোঁজখবর করে তাঁর পরিচয় জানতে পারে। তিনিও সিকিমে যাতায়াত করতেন। তাঁর স্ত্রী উষা দাস জলপাইগুড়ির বাড়িতে রয়েছেন। তাঁদের ছেলে একাদশ শ্রেণির ছাত্র বিশ্বজিৎ তাইকোয়ন্ডো খেলতে ওড়িশায় গিয়েছে। পরিবারের তরফে দেহ সংরক্ষণে জেলা প্রসাসনকে আর্জি জানিয়েছে। রবিবার সুজিতের বাড়ি গিয়েছিলেন জলপাইগুড়ির সদর বিডিও মিহির কর্মকার। বিডিও বলেন, “মৃতের ছেলের পড়াশোনার বিষয়টি দেখা হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Siliguri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy