Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

জানুয়ারিতেই ছিটে মিলবে জমির কাগজ

বিজেপির পক্ষ থেকে বারবারই সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দাদের জন্য বরাদ্দ টাকা নিয়ে দুর্নীতি-সহ নানা অভিযোগ তোলা হয়। ২৯ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহার সফরে এসে প্রশাসনিক বৈঠকে ওই প্রসঙ্গ তোলেন।

কোচবিহারের সাবেক ছিটমহলের একটি গ্রাম। —ফাইল ছবি

কোচবিহারের সাবেক ছিটমহলের একটি গ্রাম। —ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৬
Share: Save:

সামনেই লোকসভা নির্বাচন, তার আগে সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দাদের হাতে জমির খতিয়ান তুলে দেওয়ার কৃতিত্ব নিয়েই প্রচারে ঝাঁপাতে চাইছে তৃণমূল। প্রশাসন সূত্রে খবর, ৩ জানুয়ারি সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দাদের হাতে জমির খতিয়ান তুলে দেবে সরকার। শুক্রবার তা নিয়ে বৈঠকও হয় কোচবিহারে। ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। মন্ত্রী বলেন, “একমাত্র তৃণমূল সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যেই নিজেদের অধিকার পেলেন সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারা। কেউ কখনও তাঁদের কথা ভাবেনি।”

বিজেপি অবশ্য তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ওই কাজে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে। বিজেপির জলপাইগুড়ির পর্যবেক্ষক তথা কোচবিহারের বাসিন্দা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার সাবেক ছিটমহল সমস্যার সমাধান করেছে। ওই বাসিন্দারা যাতে অধিকার ফিরে পান, ভালভাবে থাকতে পারেন সে জন্য টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। তার পরেও কোনও কাজ হয়নি।” তিনি অভিযোগ করেন, আগাম শুনানি না করেই জমির খতিয়ান বিলির সিদ্ধান্তে অনেক ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে। তাতে ভবিষ্যতে বাসিন্দারা সমস্যার মুখে পড়বেন। কোচবিহার জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, “নিয়ম মেনে সমীক্ষার করার পরেই মন্ত্রিসভায় বিল পাশ হয়েছে। সেই হিসেবেই বাসিন্দাদের জমির খতিয়ান তুলে দেওয়া হবে। তাতে ভুল থাকার সম্ভাবনা নেই।”

বিজেপির পক্ষ থেকে বারবারই সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দাদের জন্য বরাদ্দ টাকা নিয়ে দুর্নীতি-সহ নানা অভিযোগ তোলা হয়। ২৯ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহার সফরে এসে প্রশাসনিক বৈঠকে ওই প্রসঙ্গ তোলেন। কেন এখনও জমি পাননি সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারা সে প্রশ্ন তুলে ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকদের ক্ষোভ জানান। তিনি অর্ডিন্যান্স জারি করে তিনদিনের মধ্যে জমি ফেরানোর নির্দেশ দেন। তারপরেই মন্ত্রিসভায় বিল পাশ করে জমি ফেরানোর প্রক্রিয়ায় গতি আসে।

শুক্রবার জমির খতিয়ান মেলার খবর পৌঁছে যায় পোয়াতুরকুঠি, করলা, মশালডাঙার মতো সাবেক ছিটমহলে। আনন্দে মেতে ওঠেন বাসিন্দারা। অনেকেই আবার ঠিকঠাক কাগজ পাবেন কি না তা নিয়েও চিন্তা করছেন। পোয়াতুরকুঠির বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে আমরা খুশি হয়েছি। একে একে সমস্ত অধিকার হাতে পেতে চলেছি। এলাকায় উন্নয়নের কাজ হয়েছে। সব মিলিয়ে আজ খুব ভাল লাগছে।” ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই সাবেক ছিটমহল বিনিময় হয়। সেই প্রসঙ্গ তুলে মশালডাঙার বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন বলেন, “তিন বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও অনেক অধিকার পাওয়া যায়নি। আরও আগেই জমির অধিকার পাওয়া উচিত ছিল। তার পরেও তা পাওয়া যাচ্ছে শুনে খুশি হয়েছি।” কয়েকজন বাসিন্দার কথায়, “খতিয়ান পাওয়ার পরেই বুঝতে পারব আমাদের জমি ঠিকঠাক রয়েছে কি না। না হলে ফের প্রশাসনের দ্বারস্থ হতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chitmahal Land Deed
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE