Advertisement
E-Paper

শিশুকে বাঁচাতে রেফারের সিদ্ধান্ত বদল ডাক্তারদের

রাজ্যজুড়ে রেফার-রোগ নিয়ে প্রায়শই নানা অভিযোগ ওঠে। বিভিন্ন সময়ে এ নিয়ে কড়া নির্দেশ দিতে দেখা যায় স্বাস্থ্য ভবনের শীর্ষ কর্তাদের।

পার্থ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২২ ০৭:৫৩
চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়ে উঠছে কিশোরী। (ডান দিকে) মঙ্গলবার ভর্তির সময়।

চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়ে উঠছে কিশোরী। (ডান দিকে) মঙ্গলবার ভর্তির সময়। —নিজস্ব চিত্র।

মরোনাপন্ন অবস্থাতেই কার্যত তাকে নিয়ে আসা হয়েছিল হাসপাতালে। প্রয়োজন ছিল ভেন্টিলেশনে রেখে চিকিৎসা করানোর। কিন্তু আইসিইউ-তে ফাঁকা নেই একটি শয্যাও। এই পরিস্থিতে রেফারের সিদ্ধান্ত নিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু অন্য হাসপাতালে পৌঁছোনোর আগে রাস্তাতেই বড় কোনও অঘটন ঘটে যাবে না তো? তা ভেবেই ফের বদলানো হল সিদ্ধান্ত। পরিবর্তে যমে-মানুষের টানাটানির এই লড়াইয়ে জয়ী হতে একজোট হলেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের সেই মিলিত চেষ্টাই বাঁচিয়ে দিল বিষধর সাপে কাটা নয় বছরের শিশু কন্যাটিকে। ঘটনাটি আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের।

রাজ্যজুড়ে রেফার-রোগ নিয়ে প্রায়শই নানা অভিযোগ ওঠে। বিভিন্ন সময়ে এ নিয়ে কড়া নির্দেশ দিতে দেখা যায় স্বাস্থ্য ভবনের শীর্ষ কর্তাদের। ঠিক এই পরিস্থিতিতে রেফারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেও, তা বদলে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের এক দল চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী প্রিয়ালী রায় নামে ওই শিশু কন্যাটিকে মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচিয়ে তোলায় তাঁদের কুর্নিশ জানাচ্ছেন অনেকেই। চিকিৎসকদের অবশ্য তাতে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। বরং তাঁরা বলছেন, সাপে কাটা কোনও রোগীকে দ্রুত সরকারি হাসপাতালে নিয়ে এলে, তাকে যে বাঁচানো সম্ভব এই ঘটনা সেটা আরও এক বার প্রমাণ করল।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, নয় বছরের ওই শিশুটির বাড়ি কোচবিহার জেলার মরিচবাড়ি খোল্টা এলাকায়। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে একটি বিষধর সাপ কামড় দেয়। ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে শিশুটিকে তার বাড়ির লোকেরা নিয়ে আসেন। সেখানে চিকিৎসক রণদীপ রায়ের অধীনে শিশুটিকে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শিশুটির অবস্থা তখন আশঙ্কাজনক। ডেকে আনা হয় আর এক চিকিৎসক পল্লব বিশ্বসকে। কাজ ফেলে শিশুটির কাছে ছুটে যান হাসপাতালের সুপার চিন্ময় বর্মণও। বুধবার সুপার বলেন, “শিশুটির শারীরিক অবস্থা তখন একেবারেই খারাপ ছিল। অথচ, ভেন্টিলেশনে রাখার সুযোগ নেই। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা তাকে রেফারের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু রেফার করলে রাস্তাতেই শিশুটির মৃত্যুর একটা আশঙ্কা থেকে যাচ্ছিল।”

হাসপাতাল সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে সুপার-সহ তিন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী একজোট হয়ে লড়াইয়ে নামেন। এভিএস-এর রিপিট ডোজ় ও অন্যান্য ওষুধপত্রের সাহায্যে তাকে কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থাতে নিয়ে আসেন তাঁরা। এই মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও শিশুটির প্রাণ সংশয় নেই বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতাল সুপার বলেন, “মৃত্যুর মুখ থেকে শিশুটিকে ফিরিয়ে আনার সব কৃতিত্বই তার বাড়ির লোকেদের প্রাপ্য। তাঁরা শিশুটিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন বলেই চিকিৎসকরা তাকে বাঁচাতে পেরেছেন।”

Health
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy