E-Paper

ডুয়াসের্র চায়ের দেড়শো বছরের অনুষ্ঠান, প্রশ্ন পরিচিতি নিয়ে

ডুয়ার্সের তথা উত্তরবঙ্গের চায়ের অঢেল চাহিদা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে। প্রতি বছর কয়েক লক্ষ কেজি চা পাতা সরাসরি গুজরাতে যায়।

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:৩৬
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সার্ধশতবর্ষ ছুঁতে চলেছে ডুয়ার্সের চা। বছর শেষে, ডুয়ার্স তথা অবিভক্ত জলপাইগুড়ির চা শিল্পের দেড়শো বছর পূর্তিতে দেশ-বিদেশের চা প্রস্তুতকারী, বিপণনে যুক্ত থাকা সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। ডুয়ার্সের জঙ্গল লাগোয়া হোটেলে ডুয়ার্সের চা নিয়ে আলোচনাশিবিরও হবে। উৎসব-আলোচনার আয়োজনের সঙ্গেই প্রশ্ন উঠেছে, দেড়শো বছর পার করলেও ডুয়ার্স চা নিজের পরিচিতি পেল কি! ডুয়ার্সের চা প্যাকেটজাত করে অসম চায়ের নামে বিক্রি হলেও আটকানো সম্ভব হচ্ছে না কেন, সে প্রশ্নও উঠেছে।

১৮৭৪-৭৫ সালে অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলায় প্রথম চা বাগানের পত্তন হয়। তার আগে, তরাইয়ে চা বাগান গড়ে উঠেছে। অসম-দার্জিলিঙে চায়ের বাগান হয়েছে আরও আগে। সে সময়ের ব্রিটিশ চা শিল্পপতিরা ডুয়ার্সের আবহাওয়া, জমির ধরন দেখে চা বাগান পত্তনের অনুকূল বলে মনে করেন। জলপাইগুড়ির গজলডোবায় ডুয়ার্স তথা অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলার প্রথম চা বাগান গড়ে ওঠে। সে চা বাগান এখন নেই। গজলডোবা এখন পর্যটন কেন্দ্র ‘ভোরের আলো’র জন্য পরিচিত।

জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার মিলিয়ে ডুয়ার্সে বর্তমানে চা বাগানের সংখ্যা ১৭২টি। মাঝারি চা বাগান মিলিয়ে এই সংখ্যা দু’শোর বেশি। ক্ষুদ্র চা বাগানের সংখ্যা ডুয়ার্সে ত্রিশ হাজারেরও বেশি। রাজ্যের মোট উৎপাদিত চায়ের ষাট শতাংশেরও বেশি জোগান দেয় ডুয়ার্স। সেই ডুয়ার্সের চা শিল্পের সামনে রয়েছে বড় প্রশ্ন। চা পর্ষদ ডুয়ার্সের চায়ের পৃথক ‘লোগো’ প্রচলন করলেও, তা বহুল পরিচিতি পায়নি। এমনকি, ডুয়ার্সের নামে চা প্যাকেটজাত করার প্রবণতাও কম।

ডুয়ার্সের তথা উত্তরবঙ্গের চায়ের অঢেল চাহিদা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে। প্রতি বছর কয়েক লক্ষ কেজি চা পাতা সরাসরি গুজরাতে যায়। গুজরাতের একাধিক সংস্থা ডুয়ার্সে এসে কারখানা থেকে চা কিনে নিয়ে যায়। দেশের একাধিক চা প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘ব্র‍্যান্ড ডুয়ার্স’-এর থেকে চা কেনে। উত্তরবঙ্গের অন্যতম চা প্রস্তুতকারী জীবনচন্দ্র পাণ্ডে বলেন, “ডুয়ার্সের চা স্বাদে-গন্ধে অন্য রাজ্যের চায়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ডুয়ার্সের চা প্যাকেটে ভরে অন্য নামে বাজারে বিক্রি হয়।”

ডুয়ার্সের চায়ের সার্ধশতবর্ষ পাললের আয়োজন করেছেন ক্ষুদ্র চা চাষিরা। ক্ষুদ্র চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘সিস্টা’-র সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “ডুয়ার্সের চা উৎপাদনের চৌষট্টি শতাংশ জোগান দেয় ছোট চা বাগান। সে কারণে আমরাই আয়োজন করেছি ডুয়ার্স চায়ের দেড়শো বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের।” মূল অনুষ্ঠানের সঙ্গে তিনটি আলোচনাসভা হবে। প্রথমটি ডুয়ার্স চায়ের ইতিহাস নিয়ে, দ্বিতীয় আলোচনায় দেশ-বিদেশের বিপণনকারীরা আসবেন ডুয়ার্স চায়ের ‘ব্র‍্যান্ডিং’ নিয়ে, এবং সরকারি কর্তা-সহ চা উৎপাদকদের নিয়ে ডুয়ার্সের চায়ের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে আলোচনা হবে আগামী নভেম্বরের ‘কনক্লেভ’-এ। ডুয়ার্সের চা বিপণনকারীদের আশা, দেড়শো বছর পূর্তির ‘কনক্লেভ’-এ চা প্রস্তুকারী সংস্থার সঙ্গে সরাসরি ‘মৌ’ (মেমোরান্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং) হতে পারে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tea Garden Dooars

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy