E-Paper

দেশের অর্থনীতিতে স্বমহিমায় থেকে যাবেন

মনে আছে, ইউপিএ সরকারের আমলে ডুয়ার্সে তথা জলপাইগুড়িতে বার বার তৎকালীন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জয়রাম রমেশকে নিয়ে এসেছিলাম।

দেবপ্রসাদ রায়

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:০৬
প্রয়াত ডঃ মনমোহন সিংহ।

প্রয়াত ডঃ মনমোহন সিংহ।

অসমে গিয়েছি কাজে। উঠেছি গুয়াহাটি সার্কিট হাউসে। আমার সঙ্গে রয়েছেন এক জন। হঠাৎ দেখি, পাশের ঘরে বসে আছেন মনমোহন সিংহ। তখন তিনি রাজ্যসভার সাংসদ। অসম থেকেই তিনি রাজ্যসভায় নির্বাচিত। ওঁকে দেখে পাশের ঘরে ঢুকলাম। ওঁর সঙ্গে অনেকক্ষণ আলাপচারিতা হল। অত্যন্ত অমায়িক ভদ্রলোক। কথা সেটা নয়। কথা হল, পাশের ঘরে ওঁর মাপের রাজ্যসভার সাংসদ তো দূরের কথা, পাশের ঘরে এক জন পুরপ্রধান থাকলেও যতটা আয়োজন বা হইচই হওয়ার কথা তার ছিটেফোঁটাও ছিল না। এটাই হলেন মনমোহন সিংহ।

মনে আছে, ইউপিএ সরকারের আমলে ডুয়ার্সে তথা জলপাইগুড়িতে বার বার তৎকালীন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জয়রাম রমেশকে নিয়ে এসেছিলাম। একবার প্রণবদাকেও (মুখোপাধ্যায়) নিয়ে এসেছিলাম। সে সময় চা এবং উত্তরবঙ্গের জন্য যা যা প্রয়োজন প্রণবদাকে বললেই হয়ে যেত। প্রণবদা সে সব প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে বলতেন। আমরা দেখেছি, শুনেওছি, প্রধানমন্ত্রী হয়েও মনমোহন সিংহ প্রণবদাকে ‘স্যর’ বলে সম্বোধন করছেন। কারণ, প্রণবদা যখন অর্থমন্ত্রী ছিলেন তখন মনমোহন সিংহ রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর ছিলেন। তার পরে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেও সেই সম্পর্ক ভোলেননি, সেই সম্বোধনও ছাড়েননি। এটাই এক জন মানুষকে চেনার এক মাত্র কাহিনি হতে পারে।

মনমোহন সিংহ ২০০৪ সালে দক্ষিণ দিল্লি থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। আমাকে ডেকে বলেছিলেন ভোটে থাকতে। ছিলামও কিছুটা। বেশি থাকতে পারিনি। কারণ, সে বারই দক্ষিণ কলকাতা থেকে নাফিসা আলিকে ভোটে দাঁড় করিয়েছিলাম।

জীবদ্দশায় মনমোহন সিংহের যথাযথ মূল্যায়ণ হয়নি। তিনি যে সময়ে দেশের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন তখন দেশের সোনা বন্ধক রাখতে হচ্ছে, বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ার শূন্য। এ অবস্থায় প্রথম বাজেট যখন পড়ছেন তখন বামেদের বার বার বাধায় তাঁকে থামতে হয়েছিল। তিনি শুধু বলেছিলেন, আমাকে পড়তে দিন। সে দিন তিনি বাজেট প্রস্তাব যত পড়ছেন ততই গোটা সংসদ উপলব্ধি করছে, নতুন কিছু আসছে অর্থনীতিতে। তার পরে গোটা দেশ এবং তামাম বিশ্ব একই উপলব্ধি করেছিল এবং এখনও করছে। সেই ইতিহাস থাকবে, মনমোহনজিও ভারতের অর্থনীতিতে আমাদের স্মৃতিতে স্বমহিমায় থেকে যাবেন।

অনুলিখন: অনির্বাণ রায়

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Indian Economy dr. manmohan singh

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy