Advertisement
E-Paper

আর্সেনিকের ভয়ে শেখপুরায় বিয়ে চায় না কোনও গ্রাম

গ্রামবাসীদের আক্ষেপ, আর্সেনিকের গ্রাম হিসেবে পরিচত শেখপুরা। নব্বই দশকে আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল বহু মানুষের। এখনও গ্রামের অনেকেই আর্সেনিকের বিষ শরীরে বহন করে বেঁচে রয়েছেন। তাই বহু পরিবার শেখপুরা গ্রামে মেয়েদের পাঠাতে চাননা। অনেকে গ্রাম ছেড়েছেন। 

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৮ ০৩:১৬
আক্রান্ত: আর্সেনিক-মুক্ত পানীয় জলের আশায়। নিজস্ব চিত্র

আক্রান্ত: আর্সেনিক-মুক্ত পানীয় জলের আশায়। নিজস্ব চিত্র

পাত্র, বাড়ি-ঘর সবই পছন্দ। তবে পছন্দ নয়, গ্রাম। মানিকচক ব্লকের শেখপুরা গ্রামে মেয়েদের বিয়ে দিতে চান না অধিকাংশ পরিবারই। কেন আপত্তি শেখপুরা গ্রামে?

গ্রামবাসীদের আক্ষেপ, আর্সেনিকের গ্রাম হিসেবে পরিচত শেখপুরা। নব্বই দশকে আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল বহু মানুষের। এখনও গ্রামের অনেকেই আর্সেনিকের বিষ শরীরে বহন করে বেঁচে রয়েছেন। তাই বহু পরিবার শেখপুরা গ্রামে মেয়েদের পাঠাতে চাননা। অনেকে গ্রাম ছেড়েছেন।

শুধু মানিকচকের শেখপুর গ্রামই নয়, কালিয়াচক ব্লকের নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দড়িয়াপুর গ্রামেও শোনা যায় এমন ঘটনা। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে আর্সেনিক রোগে আক্রান্ত থাকলেও পাশে পাননি প্রশাসনকে। তাই ক্ষোভে ফেটে পড়েন দড়িয়াপুরের রুবেল শেখ, ফকিরুদ্দিন মোমিনেরা। রুবেলের প্রশ্ন, ‘‘দু’হাতের তালুর কালো ছোপ দেখিয়ে ছবি তুললে শরীর থেকে আর্সেনিক দূর হবে কি? নাকি মিলবে কোন ক্ষতিপূরণ?’’ যদিও স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি, আর্সেনিকে আক্রান্তদের পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা করা হচ্ছে।

কালিয়াচক ১, ২ ও ৩ নম্বর ব্লক এবং মানিকচক ও ইংরেজবাজার ব্লকের একাংশে এলাকার জলে আর্সেনিক রয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন করে আর্সেনিক আক্রান্তর সন্ধান মেলেনি। তবে এখনও জেলার ওই পাঁচটি ব্লকে প্রায় ২০০ জন আর্সেনিকে আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। নব্বইয়ের দশকে ওই পাঁচ ব্লকে আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২৫ জনের। তার মধ্যে শেখপুর গ্রামেরই ২০ জন। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের দাবি, আর্সেনিকের একমাত্র ওষুধ হচ্ছে পরিস্রুত পানীয় জল। আর্সেনিক মুক্ত জল খেলেই রোগ দূর করা সম্ভব। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৈয়দ শাহাজান নিজাম বলেন, “রোগীদের চিহ্নিত করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। সেই সঙ্গে রোগীদের সচেতনতার কাজও করা হচ্ছে।”

তবে অভিযোগ, আর্সেনিক কবলিত গ্রাম গুলিতেই পৌঁছয় না আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল। অভিযোগ, মানিকচকের শেখপুরা সহ কালিয়াচকের বিবি গ্রাম, মার্শালপুর, মির্জাপুর, সারদহ, মডেল পাড়া, নয়াবস্তি, কবিরাজ টোলা, টিটি পাড়া সহ বহু গ্রামের মানুষ আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। গ্রামের মানুষের বক্তব্য, তাঁদের অগভীর নলকূপ থেকে জল খেতে হচ্ছে। তাতে আর্সেনিকের ভয় যাচ্ছে না। তাঁদের একজন বলেন, ‘‘শুধু বিয়ে নয়, এখন তো দেখছি কোনও কিছুতেই পাশে দাঁড়ানোর লোক মিলবে না। সবাই আমাদের ভয় পায়।’’

পিএইচই-র এক্সজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (আর্সেনিক) রজত সাহা বলেন, “আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জলের জন্য ৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প হচ্ছে।’’

Marriage Fear Arsenic Village Drinking Water
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy