সুনসান: উপাচার্যের আবাস।
উপাচার্য নিয়োগে বিতর্কে’ জেরে ‘অস্বস্তিতে’ উত্তরবঙ্গের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়। এরই মাঝে স্কুলশিক্ষায় নিয়োগে অনিয়মে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগে উত্তরবঙ্গের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যেরই গ্রেফতার হওয়ার খবর কার্যত ‘বজ্রপাতের’ মতো নেমে এসেছে উত্তরের শিক্ষামহলে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় উত্তরবঙ্গের শিক্ষার অন্যতম অভিজাত এবং মহীরূহ প্রতিষ্ঠান বলেই পরিচিত। সে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হওয়ার জেরে দেশের এবং বিদেশেরও শিক্ষা মহলে কী বার্তা যাবে তা নিয়েই শঙ্কিত উত্তরের শিক্ষানুরাগীরাকোচবিহারের খট্টিমারি সুকান্ত বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম সাহা বললেন, “উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য কলঙ্কিত হল। সব সময় এমন প্রতিষ্ঠানে এমন কাউকে বসানো উচিত যিনি সুনাম বজায় রাখবেন।’’ উত্তরের শিক্ষাবিদদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, অতঃকিম! এর পরে কী?
সরকারি নির্দেশে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদে অন্য কেউ বসবেন সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু উত্তরবঙ্গের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও বিতর্কের ছায়া ক্রমশ লম্বা হয়ে চলেছে বলে দাবি। পঞ্চানন বর্মা, গৌড়বঙ্গ ও রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়— তিন প্রতিষ্ঠানের উপাচার্যেরই সাম্প্রতিক নিয়োগে রাজ্যপাল তথা আচার্যের অনুমোদন নেই। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি মুখোপাধ্যায় বন্দ্যোপাধ্যায়কে সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্ট সরানোর নির্দেশ দিয়েছে। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, উপাচার্যের নিয়োগ যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে হয়নি। একই প্রক্রিয়া উত্তরবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও অনুসরণ করা হয়েছিল। রাজ্যপালের অনুমোদন ছাড়া, উপাচার্য নিয়োগ হওয়ায় উত্তরের এইসব বিশ্ববিদ্যালয়েও শাস্তির খাঁড়া নেমে আসবে কি না, তা নিয়ে চলছে চর্চা।
রায়গঞ্জের উপাচার্যের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায়, দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়েরও স্থায়ী উপাচার্য। দক্ষিণ দিনাজপুরের নিয়োগে পুরনো পদ্ধতি মেনেই রাজ্যপালের সম্মতি নিয়ে হয়েছিল বলে দাবি। তবে রায়গঞ্জের ক্ষেত্রে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত যেহেতু অতিরিক্ত দায়িত্বে, সে কারণে রাজ্যপালের অনুমোদন লাগে না বলে দাবি তাঁর। গৌড়বঙ্গের উপাচার্য শান্তি ছেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। উপাচার্য নিয়োগ বিতর্ক রয়েছে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়েও। সেখানকার উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের গ্রেফতার হওয়ার প্রসঙ্গকে ‘বিচারাধীন’ বলে দাবি করে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
ঘটনায় স্তম্ভিত অনেকে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন প্রধান আনন্দগোপাল ঘোষের মন্তব্য, “ভাল লাগছে না।” উত্তরবঙ্গের শিক্ষাজগতের পরিচিত মুখ তথা বিজেপির পদাধিকারী ধীরাজমোহন ঘোষের কথায়, “রাজনীতি এড়িয়ে বলছি, উপাচার্যের গ্রেফতার হওয়ার ঘটনা শিক্ষাজগতে বড় ছাপ ফেলবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy