Advertisement
০২ মে ২০২৪
elephant attack

উত্তরবঙ্গেও ‘গজমিত্র’ চায় বন দফতর

রাজ্য বন আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, শীঘ্রই উত্তরবঙ্গে ‘গজমিত্র’ প্রকল্প চালু করা হবে। দক্ষিণবঙ্গে ওই মডেল সফল হওয়ার পর এ বার উত্তরবঙ্গের পালা।

picture of tree.

মহারাজঘাটে ঢোকার আরেকটি রাস্তা বন্ধ করেছে বন দফতর। নিজস্ব চিত্র

শান্তশ্রী মজুমদার
শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:০৭
Share: Save:

হাতির আক্রমণে ছাত্রের মৃত্যুতে তোলপাড় উত্তরবঙ্গ তথা গোটা রাজ্য। তড়িঘড়ি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে বন সুরক্ষা নিয়ে চিন্তাভাবনাও শুরু হয়েছে। রাজ্য বন আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, শীঘ্রই উত্তরবঙ্গে ‘গজমিত্র’ প্রকল্প চালু করা হবে। দক্ষিণবঙ্গে ওই মডেল সফল হওয়ার পর এ বার উত্তরবঙ্গের পালা। যদিও অনেকেই একে ‘নতুন বোতলে পুরনো মদ’ হিসেবেই দেখছেন।

উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে বনবস্তির বাসিন্দাদের নিয়ে অনেক আগে তৈরি হয়েছিল যৌথ বনরক্ষা কমিটি। এই কমিটির সদস্যদের কাজ হল সার্বিক ভাবে বৃক্ষরোপণ, বনজ সম্পদ পাচার রোধ, পশু-মানুষ সংঘাত মেটাতে বন আধিকারিকদের সাহায্য করা। ওই সব কাজের জন্য প্রতি বছর টাকাও বরাদ্দ হয়। কিন্তু টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে এবং টাকা পাওয়ার পরে নানা রকম ঝামেলায় কাজের উৎসাহ হারাচ্ছেন সেইসব কর্মীরা। উত্তরবঙ্গের কয়েকটি বন বিভাগে যেমন এই কমিটির সদস্যেরা সক্রিয়। অন্যান্য অনেক জায়গাতেই তা নেই। আর ‘গজমিত্র’ প্রকল্প চালু হয়েছিল গত বছর, মূলত দক্ষিণবঙ্গের বনাঞ্চলের কথা ভেবে। এই প্রকল্পে ‘গজমিত্র’, অর্থাৎ প্রকল্পে যুক্ত কর্মীদের মূল কাজ বনবস্তি, জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় নজরদারি রাখা। কোনও এলাকায় হাতি ঢুকে পড়লে তা অ্যাপের মাধ্যমে বন আধিকারিকদের এবং গ্রামবাসীকে জানিয়ে দেওয়া।

এ বার এই ‘গজমিত্র’ নামের প্রকল্পই উত্তরবঙ্গে চালু করতে চায় বন দফতর। রাজ্যের হেড অফ ফরেস্ট ফোর্স (হফ) সৌমিত্র দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘দক্ষিণবঙ্গে গজমিত্র প্রকল্প সফল হয়েছে। আমরা উত্তরবঙ্গেও তা দ্রুত চালু করতে চাই। যৌথ বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যদেরই টাকা দিয়ে প্রকল্পে শামিল করা হবে।’’

অনেকের দাবি, বনবস্তি এলাকা থেকে সেই দিনমজুরদের তুলে ‘গজমিত্রে’র মতো প্রকল্পের কাজ হলে একই ভাবে মার খেতে পারে বন সুরক্ষার সার্বিক কাজ এবং পশু-মানুষ সংঘাত কমানোর কাজও। বন দফতর সূত্রে বলা হচ্ছে, আগে বন রক্ষা কমিটির কাছে টাকা পৌঁছলে অনেক সদস্য টাকা পেতেন না বলে অভিযোগ উঠত। সেই সমস্যা কাটিয়ে এ বার ব্যক্তিগত ভাবে টাকা দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। যে কর্মীদের নতুন করে প্রকল্পে শামিল করা হবে, তাঁরা সেই বন বস্তিরই দিনমজুর। কিন্তু তাঁদের প্রশিক্ষণ কোথায়, কী ভাবে হবে, প্রশ্ন তুলেছে বন এবং বন্যপ্রাণ নিয়ে কর্মরত সংস্থাগুলি। তাদের দাবি, বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যেরা যে কোনও রকমের মানুষ-পশু সংঘাত মোকাবিলায়, এমনকি স্কোয়াডেও কাজ করতেন। তাঁদের আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ কখনওই হত না।

বন্যপ্রাণ নিয়ে কর্মরত সংস্থা স্ন্যাপের কর্ণধার কৌস্তভ চৌধুরী বলেন, ‘‘গজমিত্র নিয়োগ ভাল কথা। কিন্তু এ বার প্রশিক্ষণে কোনও গাফিলতি বন দফতর না রাখলেই ভাল। প্রয়োজনে উত্তরবঙ্গে আরও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাড়ানো হোক।’’ ফরেস্ট গার্ড নিয়োগ করে কবে বিশাল শূন্যপদ পূরণ হবে, এখনও অনিশ্চিত। সেই ঘাটতি পূরণ করতেই কি ‘গজমিত্র’ প্রকল্প উত্তরবঙ্গে চালু হচ্ছে? ফরেস্ট গার্ড নিয়োগের ব্যাপারে অবশ্য চেষ্টা চলছে বলেই জানিয়েছেন আধিকারিকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

elephant attack North Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE