Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Sikkim Flash Flood

বিপর্যয়-পরবর্তী পাহাড়ে নাগাড়ে বাজছে ফোন, সমতলে অপেক্ষা পরিজনদের, কবে ফিরবেন ওঁরা?

সিকিমের সিংতামে কাজ করতে গিয়ে আটকে গিয়েছিলেন শ্রীবাস সরকার নামে বিন্নাগুড়ির এক বাসিন্দা। হড়পা বানের রাতে তাঁর থাকার ঘরেও জল ঢুকতে শুরু করেছিল।

Tourist Being rescued from Sikkim

সিকিমের বিভিন্ন এলাকায় আটকে থাকা পর্যটকদের, হেলিকপ্টারে আনা হচ্ছে সমতলে (বাঁ দিকে)। সিকিমে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে পর্যটকেরা (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

কৌস্তভ ভৌমিক, অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি:, গ্যাংটক শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৩৮
Share: Save:

গ্যাংটকের এম জি রোডের এক পাশে বিপর্যয় সহায়তা কেন্দ্র। টেবিল-চেয়ার নিয়ে বসে সিকিম সরকারের কয়েক জন আধিকারিক। মোবাইল ফোন সারাক্ষণ বেজে যাচ্ছে। বেশির ভাগ ফোনই উত্তরবঙ্গের কোনও জেলার। কারও ছেলে নিখোঁজ, কারও স্বামী। সেনাবাহিনীর পোর্টারের কাজ করতেন কেউ, কেউ নির্মাণকর্মী। সিকিমের হড়পা বানের বিপর্যয়ের পর থেকে তাঁদের খোঁজ মিলছে না। সহায়তা ডেস্কের কর্মী ফোনে বিবরণ শুনে, নামধাম সব মোটা খাতায় লিখে রাখছেন। নিখোঁজের তালিকা ক্রমশ লন্বা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ থেকে সিকিমে যাওয়ার রাস্তা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যেরা সিকিমে পৌঁছতে না পেরে স্থানীয় থানায় বার বার খোঁজ করছেন। অপেক্ষা করে আছেন থানার সামনে, যদি কোনও খবর আসে।

সিকিমের লাচুং ও লাচেনে আটকে পড়া পর্যটক এবং স্থানীয় মানুষজনকে উদ্ধার করা শুরু করেছে সেনা। আবহাওয়া খারাপ থাকার জন্য হেলিকপ্টারে পর্যটকদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছিল না। এ দিন আবহাওয়া অনুকূল হতেই সে কাজ শুরু হয়।

সিকিমের সিংতামে কাজ করতে গিয়ে আটকে গিয়েছিলেন শ্রীবাস সরকার নামে বিন্নাগুড়ির এক বাসিন্দা। হড়পা বানের রাতে তাঁর থাকার ঘরেও জল ঢুকতে শুরু করেছিল। সোমবার ঘুরপথে বিন্নাগুড়ির বাড়িতে ফিরেছেন তিনি। শ্রীবাস বলেন, ‘‘বিপর্যয়ের পরে, প্রথম দু’দিন বিদ্যুৎ, পানীয় জল ছিল না। রাস্তা বন্ধ থাকায় ফিরতে পারিনি। অনেক কষ্ট করে ঘুরপথে বাড়ি ফিরলাম।’’

ধূপগুড়ির ডাউকিমারির একই পরিবারের তিন জনের খোঁজ নেই। সিকিমে নির্মাণ-শ্রমিকের কাজে গিয়েছিলেন গোপাল রায় ও তাঁর দুই ভাইপো—উজ্জ্বল ও চন্দন। গত ৪ অক্টোবর হড়পা বানের পর থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই পরিবারের। গত শনিবার রাত ৭টা নাগাদ ধূপগুড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরিবারের সদস্য জ্যোতিষ রায় জানিয়েছেন ২৯ সেপ্টেম্বর তিন জন একসঙ্গে সিকিমের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। প্রতি দিনই পরিবারের কারও না কারও সঙ্গে তাঁদের ফোনে কথা হত। বিপর্যয়ের আগের দিনও হয়েছিল। এখন প্রতি দিনই পরিবারের কেউ না কেউ ধূপগুড়ি থানায় গিয়ে অপেক্ষা করে থাকেন, যদি খোঁজ আসে। পুলিশের তরফে পরিবারের সদস্যদের ফোন নম্বর নেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, খোঁজ পেলে ফোন করে জানানো হবে। তবু পরিবারের কেউ না কেউ অপেক্ষায় থাকেন থানায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gangtok Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE