E-Paper

‘অভয়া পুকুরে’ বাড়বে দেশি মাছ

মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, আলিপুরদুয়ারের ছেঁকামারি এবং মালদহের বড় সাগরদিঘিকে ‘অভয়া পুকুর’ করা হয়েছে। বড় সাগরদিঘি ৮২ হেক্টর এলাকা জুড়ে রয়েছে।

নীতেশ বর্মণ

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫৬
নদীয়ালি মাছা ধরতে, মহানন্দা নদীতে ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয়েরা। শনিবার শিলিগুড়ির গুরুং বস্তিতে।

নদীয়ালি মাছা ধরতে, মহানন্দা নদীতে ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয়েরা। শনিবার শিলিগুড়ির গুরুং বস্তিতে। ছবি: স্বরূপ সরকার।

সেখানে থাকবে না চোরা মাছশিকারিদের দাপাদাপি। বৈদ্যুতিক জালে মাছ ধরতে পারবে না কেউ। মশারি জাল দূর, মৎস্যজীবীদেরও সেখানে প্রবেশে নানা নিয়ম থাকবে। এমনই পুকুরে দেশি মাছ সংরক্ষণের পথে এগোচ্ছে মৎস্য দফতর। তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অভয়া পুকুর’। এক কথায়, মাছেদের অভয়ারণ্য। খাল, বিল বা ছোট নদীতে যাতে দেশীয় মাছের জোগান ঠিক রাখা যায়, সে জন্য ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবে উত্তরবঙ্গের দুই জেলায় ‘অভয়া পুকুর’ তৈরি করা হয়েছে।

মৎস্য দফতরের উত্তরবঙ্গের ডেপুটি ডিরেক্টর সিদ্ধার্থ সরকার বলেন, ‘‘জীববৈচিত্র বজায় রেখে দেশীয় মাছের জোগান যাতে বৃদ্ধি পায়, সে জন্যই অভয়া পুকুরের পরিকল্পনা করা হয়। সেখানে স্থানীয় নদী, পুকুরের মাছ সংরক্ষণ করে বংশবৃদ্ধির চেষ্টা করে হবে। পরে তা স্থানীয় নদী, পুকুরে ছাড়ার ভাবনাও রয়েছে।’’

মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, আলিপুরদুয়ারের ছেঁকামারি এবং মালদহের বড় সাগরদিঘিকে ‘অভয়া পুকুর’ করা হয়েছে। বড় সাগরদিঘি ৮২ হেক্টর এলাকা জুড়ে রয়েছে। আর ছেঁকামারি কয়েক একর এলাকার। সেখানকার জলাশয়ে ছাড়া হয়েছে দেশি ট্যাংরা থেকে পুঁটি, শোল, গুতুমের মতো আরও কিছু স্থানীয় মাছ। দেখা হবে, ওই পরিবেশে সেগুলি প্রজননে সক্ষম কিনা। কতটা বংশবিস্তার হচ্ছে, তা-ও খেয়াল রাখবেন দফতরের কর্মী, আধিকারিকেরা। ধাপে ধাপে প্রতিটি জেলায় ওই রকম পুকুর খনন করে দেশি মাছ সংরক্ষণে জোর দেবে দফতর।

তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকার বোরোলির স্বাদের সুনাম রয়েছে। কিন্তু ওই মাছ এখন সচরাচর দেখা যায় না শিলিগুড়ির বাজারেও। নদী থেকে তুলতে না তুলতে সেখানেই শেষ
হয়ে যায়। ফলে জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি শহরের বাজারে আসে বিহার, অসম, অন্ধ্রপ্রদেশের বিভিন্ন মাছ বা চাষ করা বোরোলি। তার স্বাদ তুলনামূলক ভাবে কম বলে দাবি ক্রেতাদের
একাংশের। মাথাভাঙার বাজারে একসময় রানি বা বৌসুন্দরী এবং গুতুম মাছ প্রচুর উঠত। এখন সে সবের দেখা পাওয়া দায়। বালুরঘাটে আত্রেয়ীর রায়খোর মাছের ক্ষেত্রেও তাই। আরও কিছু নদী, পুকুরে নানা জাতের মাছ পাওয়া যেত। সেগুলি হারিয়ে যেতে বসেছে বলে অভিযোগ।

পুকুরগুলিতেও বাণিজ্যিক ভাবে মাছ চাষ শুরুর পর থেকে ছোট মাছও অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে। কারণ বাণিজ্যিক ভাবে মাছ চাষে রাসায়নিক সার, চুন থেকে দ্রুত মাছ বৃদ্ধির জন্য নানা ওষুধ দেওয়া হয়। সে জন্যেই দেশীয় মাছের সংরক্ষণের দাবি উঠেছে অনেক দিন। এ বার সে পথেই এগোতে চাইছে দফতর।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Siliguri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy