Advertisement
E-Paper

৫টি কবর খুঁড়তে শোকে আকুল সাঁতালি

তাঁদের সেই প্রিয় পাদরি সহ তাঁদের প্রিয় প্রতিবেশীদের জন্য এক সঙ্গে কবরের মাটি খুঁড়তে হবে। সেটা ভাবতে গিয়ে কেঁদে উঠলেন সাঁতালি গ্রামের যোগেশ কুজুর সহ অন্যেরা।

রাজু সাহা

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:১২
কান্না: স্বামী, কন্যার মৃত্যুর পরে আরতিদেবী। নিজস্ব চিত্র

কান্না: স্বামী, কন্যার মৃত্যুর পরে আরতিদেবী। নিজস্ব চিত্র

ধর্মসভায় গিয়ে আত্মীয়ার সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করা আর হল না। ধর্মসভায় পৌঁছনোর আগেই আলিপুরদুয়ার জেলার পূর্ব সাঁতালি গ্রামের পথ দুর্ঘটনায় এক সঙ্গে গ্রামের চার্চের এক পাদরি সহ ৫ জনের মৃত্যু হল। মর্মান্তিক এই ঘটনার খবর পৌছতেই গোটা সাঁতালি গ্রাম জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কান্নার রোল গোটা গ্রামে। গ্রামের মঙ্গলের জন্য, সকলের সুখের জন্য যে পাদরি প্রতিদিন চার্চে প্রার্থনা করেন, কেউ মারা গেলে তাঁর আত্মার শান্তির জন্য যিনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন। তাঁদের সেই প্রিয় পাদরি সহ তাঁদের প্রিয় প্রতিবেশীদের জন্য এক সঙ্গে কবরের মাটি খুঁড়তে হবে। সেটা ভাবতে গিয়ে কেঁদে উঠলেন সাঁতালি গ্রামের যোগেশ কুজুর সহ অন্যেরা।

শান্তিপ্রিয় বড়ো জনজাতি অধ্যুষিত শান্ত স্নিগ্ধ সাঁতালি গ্রাম। পাঁচটি মৃত্যুর শোকে মুহ্যমান এই গ্রামটি আজ শোকে বিহ্বল। গ্রামের তরতাজা পাঁচটি মানুষ এক সঙ্গে প্রাণহীন হয়ে পড়েছেন এটা গ্রামের কেউ মেনে নিতে পারছেন না। বুধবার দুপুরে এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর গ্রামে পৌঁছতেই কান্নায় রোল পড়ে যায় গ্রাম জুড়ে।

মৃত অজিতকুমার বসুমাতা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মী। শান্ত প্রকৃতির অজিতবাবু সকলের প্রিয় ছিলেন। অজিতবাবুর ছেলে ডেভিড বাবা ও মায়ের মৃত্যুর খবরে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন। তিনি জানান, বাবা মা এ দিন অন্যদের সঙ্গে তাঁদের এক অসুস্থ অাত্মীয়ের সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করতে এক ধর্মসভায় যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমারও যাওয়ার কথা ছিল। আমি যাইনি। এখন মনে হচ্ছে, বাবা মা-র সঙ্গে আমিও গেলে ভাল হত। বাবা মা ছাড়া একদিনও এই পৃথিবীতে থাকতে হত না আমার। আমি কী করে বেঁচে থাকব?”

মৃত অমৃত ব্রহ্মের স্ত্রী আরতিদেবী আলিপুরদুয়ার পুলিশ সুপারের অফিসের পুলিশকর্মী। এ দিনও তিনি ডিউটিতে ছিলেন। পুলিশের খাকি পোশাকের উর্দি পরে ছুটে গিয়েছেন এক কিলোমিটার দূরে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে। গিয়ে স্বামী ও মেয়ের মৃতদেহ দেখে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। কাঁদতে কাঁদতে বারবার বলছিলেন, ‘‘এক সঙ্গে দু’জনকে কেন ঈশ্বর কেড়ে নিলেন?’’

Police Husband স্বামী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy