E-Paper

বন্যপ্রাণের মৃত্যু ঠেকাতে যন্ত্রে জুড়ল কৃত্রিম মেধা   

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এত দিন ডুয়ার্সের ওই এলাকায় রেল লাইনের আশেপাশে হাতি চলে এলে তা সেন্সর এবং ‘ট্র্যাপ ক্যামেরা’য় ধরা পড়ত।

বিদেশ বসু

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:৫১
যন্ত্র চালুর পরে। নিজস্ব চিত্র

যন্ত্র চালুর পরে। নিজস্ব চিত্র

ডুয়ার্সের বনাঞ্চল মধ্যবর্তী রেললাইনে হাতি এবং অন্য কোনও বন্যপ্রাণীর চলে আসার ভিডিয়ো এবং ছবি সরাসরি পৌঁছে যাবে বন এবং রেল দফতরে। কৃত্রিম মেধা (আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ব্যবহার করা হবে এ কাজে। কন্ট্রোল রুম থেকে দ্রুত সংশ্লিষ্ট ‘লোকো পাইলট’দের ছবি ও ভিডিয়ো পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বুধবার থেকে ডুয়ার্সের বনাঞ্চল এবং হাতি চলাচলের পথে ট্রেনের সঙ্গে সঙ্ঘাত এড়াতে ওই ব্যবস্থা চালু হল। এ দিন বুধবার বিকেলে বন এবং রেল দফতরের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে চাপড়ামারি অভয়ারণ্য লাগোয়া বনাঞ্চলে হাতি চলাচলের করিডরে এই নতুন ক্যামেরাযুক্ত ‘এলিসেন্স লাইভ’ ব্যবস্থা সরেজমিনে খতিয়ে দেখা হয়।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এত দিন ডুয়ার্সের ওই এলাকায় রেল লাইনের আশেপাশে হাতি চলে এলে তা সেন্সর এবং ‘ট্র্যাপ ক্যামেরা’য় ধরা পড়ত। তার পরে তা লিখিত বার্তা আকারে পৌঁছত রেল, বন দফতরের কন্ট্রোল রুমে এবং আশেপাশের স্টেশনে। পুরনো ব্যবস্থায় কোন প্রাণী রেললাইনের আশেপাশে রয়েছে সেটি নির্দিষ্ট করে বোঝার উপায় ছিল না। রেল লাইনে উঠে পড়া অথবা আশেপাশে চলে আসা প্রাণীটি হাতি, গন্ডার নাকি বাইসন চিহ্নিত করা যেত না। নতুন ব্যবস্থায় সেই প্রাণীর ছবি এবং ভিডিয়ো দ্রুত পৌঁছবে।

ডুয়ার্সের একাধিক হাতি করিডরের উপরে রেললাইন রয়েছে। ট্রেনের ধাক্কায় হাতি কিংবা বন্যপ্রাণীর মৃত্যুও ঘটেছে। উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল ভাস্কর জেভি বলেন, ‘‘চাপরামাড়ি অভয়ারণ্য, জলপাইগুড়ি বন বিভাগের আওতাধীন এলাকায় ২৪টি ক্যামেরাযুক্ত যন্ত্র বসানো হচ্ছে। পরবর্তীতে বক্সা এলাকাতেও বসানো হবে। এ ধরনের যন্ত্রের মাধ্যমে সরাসরি তথ্য পাওয়া যাবে। এতে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে।’’

ক্যালিফোর্নিয়ার সংস্থা ‘ভয়েস ফর এশিয়ান এলিফ্যান্ট’ এই ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আর্থিক সহযোগিতা করছে। সংস্থার নির্বাহী আধিকারিক সঙ্গীতা আইয়ার বলেন, ‘‘পুরো পক্রিয়া বাস্তবায়িত করতে ৫৮ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। হাতিদের রক্ষা করতেই হবে। এক বার দেখেছিলাম এই রুটে ট্রেনের ধাক্কায় একটি গর্ভবতী হাতির মৃত্যু ঘটেছিল। এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি আমরা চাই না।’’

পরিবেশপ্রেমী সংগঠন স্ন্যাপের সহায়তায় যন্ত্রগুলি বসেছে। সংস্থার নির্বাহী অধিকর্তা কৌস্তভ চৌধুরী বলেন, ‘‘এই ব্যবস্থায় ‘থার্মাল ক্যামেরা’ থাকছে। এর মাধ্যমে বন্যপ্রাণীদের শনাক্ত করা যাবে। এমনকি আমরা দলছুট হাতিকেও চিহ্নিত করতে পারব।’’ রেলের আধিকারিকেরাও ছিলেন এ দিন। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের নিউ মালের সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (টেলিফোন) বিদ্যুত এক্কা বলেন, ‘‘আগে থেকেই রেল এবং বন দফতরের যৌথ নজরদারির ব্যবস্থা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ব্যবস্থা আরও
উন্নত হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

North Bengal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy