জনতার দ্বারা অত্যাচারিত হয়েছিল দলছুট এক হাতি। তার পর বেশ কয়েক দিন পেরোলেও এখনও পর্যন্ত ওই হাতির আর হদিশই নেই। বন বিভাগ আপালচাঁদ, তারঘেরার বনাঞ্চল তন্নতন্ন করে খুঁজেও বুধবার বিকেল পর্যন্ত হাতির খোঁজ মেলেনি। পরিবেশকর্মীরা অবিলম্বে হাতিটিকে শনাক্ত করে চিকিৎসা চালুর দাবি তুলেছেন। অন্য দিকে, ইলেকট্রিক শকে হাতি মৃত্যুর ঘটনায় ধৃতকে আদালতে তোলা হলে বিচারক বন বিভাগের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার তারঘেরা বনাঞ্চল থেকে বেরিয়ে ক্রান্তি এবং মালবাজার ব্লকে অত্যাচারিত হয় একটি হাতি। তারই প্রতিবাদে বুধবার বিভিন্ন পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের প্রতিনিধিরা গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করেন। পরিবেশপ্রেমী স্বরূপ মিত্র বলেন, ‘‘ওই হাতিটির চিকিৎসা প্রয়োজন। আমরা দাবি করছি কুনকি হাতি কিংবা প্রশিক্ষিত কুকুরের মাধ্যমে হাতিটির সন্ধান করা হোক।’’ পরিবেশকর্মীদের যৌথ মঞ্চের কর্মকর্তা অনির্বাণ মজুমদার বলেন, ‘‘ডুয়ার্স-তরাই এলাকায় মাঝেমধ্যেই হাতি এবং বন্যপ্রাণী মানুষের অত্যাচারের শিকার হচ্ছে। এই নির্মম ঘটনাগুলি বন্ধ করা দরকার।’’ বৈকুণ্ঠপুরের ডিএফও রাজা এম বলেন, ‘‘বনাঞ্চলের অভ্যন্তরে হাতিটির চলাচলের নিদর্শন পাওয়া যাচ্ছে। তবে এ দিনও সরাসরি হাতিটিকে দেখা যায়নি। আপালচাঁদের ফুলঝোড়ার ঘন বনাঞ্চল রয়েছে। ওই বনাঞ্চলেই হাতিটি থাকতে পারে। হাতিটিকে দেখা গেলেই দ্রুত চিকিৎসা করা হবে। প্রয়োজনে কুনকি হাতি ব্যবহার করা হতে পারে।’’ এ দিকে ইলেকট্রিক শকে পূর্ণবয়স্ক একটি পুরুষ হাতির মৃত্যুর অভিযোগে মঙ্গলবার বাবুলাল মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বেলাকোবা রেঞ্জের রেঞ্জার চিরঞ্জিত পাল বলেন, ‘‘ধৃত ব্যক্তিকে বুধবার জলপাইগুড়িতে আদালতে তোলা হয়। আবেদন জানানো হলে বিচারক ধৃতকে দু’দিনের জন্য আমাদের হেফাজতে দিয়েছেন।’’
অন্য দিকে, নাগরাকাটা চা বাগানে বুধবার সারাদিন চারটি হাতি আটকে ছিল। এর মধ্যে একটি হাতি অপ্রাপ্তবয়স্ক। খুনিয়া রেঞ্জের রেঞ্জার সজল কুমার দে বলেন, ‘‘চারটি হাতির উপর নজর রাখা হয়েছিল।’’ সন্ধ্যার পর হাতিগুলিকে বনে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)