Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
India U-19 Cricket Team

বিশ্বজয়ী রিচাকে নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসল শিলিগুড়ির হাতি মোড়ের বাড়ি, শুভেচ্ছা প্রাক্তন মেয়রের

খেলার শেষে রিচার বক্তব্য, ‘‘প্রথম বিশ্বকাপ হাতে ভাল লাগছে। এইজয় আরও উৎসাহ দেবে।’’

India U19 Women\\\'s Team Member Richa Ghosh and her mother Swapna Ghosh

রিচাদের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত শিলিগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের ক্রীড়ামহল। ছবি: বিনোদ দাস

নীতেশ বর্মণ
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১০:১০
Share: Save:

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাড়ির মেয়ে খেলছেন। সকাল থেকেই আত্মীয়-পরিজনের আনাগোনা ছিল। খেলা দেখতেও ভিড় করেন অনেকে। ভারতের মেয়েদের উইকেট নেওয়া, বাউন্ডারি হাঁকানোয় বারেবারে আনন্দে ফেটে পড়েছেন তাঁরা। সকালেই বাড়ির সমস্ত কাজ সেরে টিভির সামনে বসেছিলেন রিচার মা স্বপ্না ঘোষ। শিলিগুড়িশহরের হাতি মোড়ের বাড়িতে কখনও হাততালি তো কখনও উদ্বেগ। এবং শেষে উচ্ছ্বাস আর আবেগ। ভারতের জয়ের পরে উল্লাসে ফেটে পড়লেন বাড়ির সবাই। চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন রিচার মা। খানিক পরেই শুরু হল মিষ্টি বিলির পর্ব।

অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের মেয়েরা ওঠার পর থেকেই রিচাদের খেলা দেখার অপেক্ষায় ছিলেন পরিবারের লোকজন এবং শিলিগুড়িবাসী। এ দিন শহরের অনেক ক্লাবে খেলা দেখতে ভিড়ও হয়েছিল। গত শুক্রবার মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয় স্বপ্না ঘোষের। কিছু পরামর্শ দিয়ে আশীর্বাদ করেছিলেন মা।

ভারতীয় মেয়েরা যে আত্মবিশ্বাসী, খেলা শুরুর আগে এ দিন সকালে রিচার সঙ্গে কথা বলে জেনে নিয়েছিলেন রিচার দিদি। রিচাদের জেতার ব্যাপারে একশো শতাংশ নিশ্চিত ছিলেন বলে জানান বাবা মানবেন্দ্র ঘোষও। তিনি কলকাতায় ছিলেন। খেলা দেখতে না পারলেও দিনভর উদ্বেগে ছিলেন। বাড়িতে ফোন করে খেলার খবর নেন। জানান, খেলার আগেই সমাজমাধ্যমে জয়ের আগাম পোস্ট করবেন কি না, মজা করে তা পরিবারের লোকজনকে বলেওছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে টুর্নামেন্টে ভাল খেলেছে। নিজের সেরাটা দিয়ে খেলার আগ্রহ ছিলই।’’ রিচার মা স্বপ্না ঘোষ বলেন, ‘‘ঘরের মেয়েরা বিশ্বকাপ জিতল। আমার মেয়ে সেই দলের সদস্য। কী আনন্দ হচ্ছে, বোঝাতে পারব না!’’

এ দিন ভারতীয় মেয়েদের বোলিংলের সামনে ইংল্যান্ড দাঁড়াতেই পারেনি। ১৭.১ ওভারে ৬৮ রানে অলআউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড। যার মধ্যে রয়েছে রিচার করা একটি স্ট্যাম্পআউটও। ভারত ১৪ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ম্যাচ জিতে নেয়। ফলে, রিচাকে আর ব্যাট হাতে নামতে হয়নি।

রিচা ছোটবেলায় শিলিগুড়ির বাঘাযতীন অ্যাথলেটিক ক্লাবে প্রশিক্ষণ নিতেন। তাঁর প্রথম দিকের কোচ গোপাল সাহা বলেন, ‘‘রিচার সাফল্য আগামী দিনে শিলিগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের মেয়েদের উৎসাহ দেবে।’’ ক্রিকেট কোচ জয়ন্ত ভৌমিক বলেন, ‘‘এ আনন্দ কথায় প্রকাশ করা যাবে না! ভারতীয় ক্রিকেটে উজ্জ্বল নক্ষত্র হবেন রিচা!’’

খেলার শেষে বাবা মানবেন্দ্র ঘোষের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা হয় রিচার। দলের সকলেই তখন উচ্ছ্বসিত। রিচার বক্তব্য, ‘‘খুব আনন্দ হচ্ছে! আমরা জেতার জন্য প্রত্যেকে সেরাটা দিয়ে খেলার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। প্রথম বিশ্বকাপ হাতে ভাল লাগছে। এই জয় আরও উৎসাহ দেবে।’’

রিচাদের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত শিলিগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের ক্রীড়ামহল। তবে শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের আক্ষেপ, রিচাকে নিয়ে শিলিগুড়িতে তেমন গর্ববোধ নেই। সমাজমাধ্যমে সে কথা লিখেওছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বকাপ দলে শিলিগুড়ির মেয়ে রিচা রয়েছেন। কিন্তু খারাপ লাগছে, তাঁর জন্য এখানে কোনও ততটা গর্ববোধ না দেখে। আমরা গর্বিত! একটু আবেগ চাই! আবেগ!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE