শোকার্ত: মৃত ছাত্রীর মা রঞ্জিতা রায়। সোমবার ময়নাগুড়ির বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র
জীবনের প্রথম পিকনিক। আর সেই পিকনিকে গিয়েই মৃত্যু হল মেয়ের। এই ঘটনা কোনও মতেই মানতে পারছেন না বাবা অখিল রায়।
ময়নাগুড়ির মাধবডাঙা এলাকার ভুজারিপাড়ার বাসিন্দা অখিল। কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই তিনি ও তাঁর স্ত্রী। এর আগে কোনওদিন পিকনিক করতে যাননি তাঁদের মেয়ে রুমকি রায়। মাসি রঞ্জাবতী রায় সোমবার বললেন, “আমরা এর আগে কোনওদিন ওকে পিকনিক যেতে অনুমতি দিইনি। এবারেই প্রথম ওকে পিকনিক যেতে দেওয়া হয়। আর এবারেই সব শেষ হয়ে গেল।” রবিবার খবরটা শোনার পর থেকে যেন গোটা বাড়িতে শোকের ঝড় বয়ে গিয়েছে।
রবিবার কোচিং ক্লাস থেকে সহপাঠীদের সঙ্গে ডুয়ার্সের ওদলাবাড়ি লাগোয়া ঘিস নদীতে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন রুমকি। সেখানে ঘিস নদীর রেলসেতুর উপর ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় রুমকির। তাঁর বান্ধবী জয়শ্রী রায়ও গুরুতর জখম হয়। এই খবর ময়নাগুড়িতে পৌছতেই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনেও প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেননি রুমকির মা রঞ্জিতা রায়। কাল বিকেল থেকেই বাড়ির বারান্দার খুঁটি ধরে সেই যে বসে পড়েন, দিনভর তাঁকে সেখান থেকে সরানো যায়নি। দুই বোন এবং এক ভাইয়ের মধ্যে রুমকি মেজ। তিনি ময়নাগুড়ি কলেজের কলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। ময়নাগুড়ি নতুন পাড়া এলাকার এক কোচিং ক্লাসে তিনি পড়তেন। কলেজের আংশিক সময়ের শিক্ষক চন্দন সরকার এই কোচিং সেন্টারের শিক্ষক। চন্দনের উদ্যোগেই এই পিকনিকের আয়োজন হয়।
দুর্ঘটনার পর রবিবার নিউ মাল জংশনের রেল পুলিশ গিয়ে রুমকির দেহ উদ্ধার করে। এরপর সোমবার জলপাইগুড়িতে ময়নাতদন্ত হয়। সোমবার বিকেলে রুমকির দেহ বাড়িতে ফেরে। পাড়ায় সেই শোকের আবহেও ঘুরেফিরে এসেছে রুমকির মোবাইলের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তির প্রসঙ্গও।
রেল সেতুর উপর দাঁড়িয়ে মোবাইলে টিকটক ভিডিয়ো করতে গিয়েই অন্যমনস্ক হয়ে পড়েন রুমকি। ট্রেন কখন যে তাঁর খুব কাছে চলে এসে পড়েছে তা ঠাহরই করতে পারেনি রুমকি। তাঁর মোবাইল আসক্তির কথা মানছেন পরিবারের সকলেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy