স্বাধীনতা দিবসের বিকেলে বন্ধু এক তরুণের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছিল একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী। জঙ্গলের রাস্তায় সাত-আট জনের একটি দল পথ আটকায় তাঁদের। প্রেমিককে মারধর করে ওই ছাত্রীকে জঙ্গলে নিয়ে দুষ্কৃতীরা গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে দিনহাটা থানার গোসানিমারি এলাকায়। চিৎকার চেঁচামেচিতে আশেপাশের লোকজন সেখানে জড় হল দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। ওই ছাত্রীর অভিযোগ শুনে ঘটনাস্থল থেকেই শিবু দাস নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রাতে রাজা সরকার ও সদাই সরকার নামে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, গোসানিমারির ওই এলাকায় দুষ্কৃতীদের দাপট বেড়ে চলেছে। নিত্য দিন সেখানে ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে মহিলাদের। দিনহাটার এসডিপিও কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্ত ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ করা হচ্ছে। ওই ছাত্রীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে। টিআই প্যারেড করানো হবে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, গোসানিমারির ওই এলাকায় পর্য়টকদের আনাগোনা রয়েছে। সেখানে রাজপাট ছাড়াও কামতেশ্বরী মন্দির রয়েছে। রয়েছে পুরনো একটি শালবাগান। সেখানে বন দফতরের অফিস রয়েছে। নিরাপত্তা রক্ষীও থাকেন। পর্য়টকদের সেখানে রাতে থাকার ব্যবস্থা হিসেবে কটেজ তৈরি করা হয়েছে। রাজপাট খননের কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। জঙ্গলের ভিতর দিয়ে সেখানে রাস্তা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দিনহাটা থেকেও বহু মানুষ সেখানে যান। বিশেষ করে সেখানে প্রেমিক-প্রেমিকাদের ভিড় হয়।
ওই দিন বিকেলে ভেটাগুড়ির একটি হাইস্কুলের ওই ছাত্রী মাতালহাটের বাসিন্দা তরুণ বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে যান সেখানে। তাঁরা যে সময় জঙ্গলের রাস্তায় ছিলেন তখনই ওই দুষ্কৃতীরা হামলা করে। সেই সময় খানিক দূরে ছিলেন দিনহাটার আরও দুই যুবক। তাঁরাও ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। ওই ছাত্রী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, জোর করে তাঁকে জঙ্গলের ভিতরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে দুষ্কৃতীরা। ওই সময় তাঁর বন্ধু তরুণ ছোটাছুটি শুরু করে। তাঁরা দুজন চিৎকারও শুরু করে। জঙ্গল সেখানে এতটাই গভীর যে ওই চিৎকারের আওয়াজ সে রকম ভাবে কেউ শুনতে পায়নি। ওই দুই যুবক জানান, তাঁরা ওই রাস্তা ধরেই ফিরছিলেন। জঙ্গলের ভিতর থেকে চিৎকারের আওয়াজ পান তাঁরা। কিন্তু তাঁরা কেউ সেখানে যাওয়ার সাহস পাননি।
এর পরেই জঙ্গলের বাইরে খবর পৌঁছলে স্থানীয়রা সেখানে যায়। খবর দেওয়া হয় পুলিশকেও। ধৃত শিবু দাস সেখানে একটি চেরাই কল কারখানায় কাজ করেন। বাকি দু’জন দিনমজুরি করে। অভিযোগ, নিত্য দিন সেখানে ঘুরতে যাওয়া মহিলা ও কম বয়েসি মেয়েদের ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হয়। সেখানে পুলিশ নিরাপত্তার দাবি উঠেছে। অভিযোগ, এমনটা চলতে থাকলে এই এলাকায় পর্যটক যাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। এলাকার বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া বলেন, “যারা ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। যাতে ওই এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়, সে জন্য পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy