Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
CV Ananda Bose

বাংলাকে ‘শিক্ষা হাব’ করাই লক্ষ্য, জানালেন আচার্য বোস

উচ্চ শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই যে অস্থায়ী উপাচার্যদের নিয়োগ নিয়ে রাজ্য বিরোধিতা করে আদালতে গিয়েছিল, তাঁদের সঙ্গেই এ দিন বৈঠক করেন আচার্য।

An image of CV Ananda Bose

আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৩ ০৭:৩৫
Share: Save:

রাজ্যে ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বুধবার বৈঠক করলেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। উচ্চ শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই যে অস্থায়ী উপাচার্যদের নিয়োগ নিয়ে রাজ্য বিরোধিতা করে আদালতে গিয়েছিল, তাঁদের সঙ্গেই এ দিন বৈঠক করেন আচার্য। তবে রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত বৈধ বলে এ দিন আদালত জানিয়েছে। সে সঙ্গে অবিলম্বে ওই উপাচার্যের বেতন এবং সুযোগ-সুবিধা চালু করতে এ দিনই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। বৈঠকের মধ্যে তা জেনে ওই উপাচার্যেরাও নিশ্চিত হয়েছেন। বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নিয়ে দেশের এডুকেশন হাব করার লক্ষ্যে এ দিন উপাচার্যদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান আচার্য।

আদালতের রায় প্রসঙ্গে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হলে আচার্য বলেন, ‘‘হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে। সেটাই চূড়ান্ত। আমি উচ্চতর আদালত নই।" এ দিনের আলোচনা নিয়ে আচার্য বলেন, ‘‘একটাই অ্যাজেন্ডা ছিল, বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেশের সেরা হোক। বাংলাকে দেশের ‘এডুকেশন হাব’ করার লক্ষ্য পূরণ করতে আমরা সচেষ্ট হব। উপাচার্য, শিক্ষক, পড়ুয়া, শিক্ষাকর্মী, অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে শিক্ষার সেই প্রক্রিয়ায় শামিল হতে আমি বেশ কিছু ঘোষণা করেছি। সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমরা এক সঙ্গে চেষ্টা করব। এক সঙ্গে কাজ করব এটা দেখতে যে বাংলার নতুন প্রজন্ম জগৎ সেরা।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমরা দায়বদ্ধ। আমাদের সবার প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় কর্তব্য পড়ুয়াদের জন্য। তা নিয়ে উপাচার্যদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এক মাত্র উদ্দেশ্য, বাংলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি।’’

১৩ জন উপাচার্যকে ডাকা হলেও এ দিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাদে বাকিরা হাজির ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে বলেন, ‘‘আদালতের রায় নিয়ে চিন্তিত ছিলাম না। আমাদের নিয়োগ বিধি মেনে হয়েছে। অস্থায়ী ভাবে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে আচার্যের সিদ্ধান্তই সব মনে করি। শিক্ষা ব্যবস্থাকে যদি সুপ্রিম কোর্টে টেনে নিয়ে যেতে হয়, সেটা ঠিক নয়। শিক্ষাকে রাজনীতিকরণ থেকে মুক্ত করা দরকার।’’ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘আদালতের রায়কে ইতিবাতক হিসাবেই দেখছি।’’

সূত্রের দাবি, বাংলাকে কী করে ‘গ্লোবাল এডুকেশন হাব’ করা যায় তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে এ দিন। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কী করে অগ্রগতি হতে পারে, হয়েছে আলোচনা। এ দিনের বৈঠক ঘিরে শাসক শিবিরের লোকজন বিরোধিতা করেছেন। শুরুতে শাসক দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি দাবি করেছিল, এই উপাচার্যদের ‘বৈধতা’ নেই। পরে আদালতের রায় জেনে টিএমসিপির নেতারা আর কিছু বলতে চায়নি। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অমলেন্দু ভুইঁয়া বলেন, ‘‘আদালত মামলাটি খারিজ করে দিয়েছে। আমরা ইতিবাচকই ছিলাম। এখন বৈধতার স্বীকৃতি পাওয়া গেল।’’

বৈঠকে আচার্য প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা, উন্নয়নের লক্ষ্যে সাতটি কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন। তার মধ্যে একটি বিভিন্ন দুর্নীতি-প্রতিরোধ বিষয়ক। শিক্ষার আন্তর্জাতিকীরণের জন্য কমিটি থাকবে। শিক্ষার উৎকর্ষ নিশ্চিত করতে নজরদারির জন্য কমিটি থাকবে। শিক্ষকদের উন্নয়ন দেখবে ‘ফ্যাকাল্টি ডেভেলপমেন্ট’ কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্প ক্ষেত্রের সঙ্গে সমন্বয়ে কমিটি থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিবিধ বিষয়ের সমন্বয়ের জন্য আর একটি কমিটি গড়া হবে। আর একটি কমিটি হবে জাতীয় শিক্ষা নীতি সংক্রান্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE