সাক্ষাৎ: রাজ্যপালের সঙ্গে বিজেপির সাংসদ খগেন মুর্মু ও দলের মালদহ জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
বিমল গুরুংকে নিয়ে যখন উত্তপ্ত পাহাড়, সেই সময়ে দার্জিলিং সফরে এলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শনিবার দিনভর সেলুনকারে যাত্রা করে তিনি সন্ধ্যায় শিলিগুড়ি এসে পৌঁছন। আর শিলিগুড়ি পৌঁছেই তিনি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে মুখ খোলেন। রাজ্যপাল এ দিন আবারও বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আমি চিন্তিত। সংবিধানের বাঁধন থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে রাজ্য।’’ যা শুনে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে উনি ওঁর রিপোর্ট কেন্দ্রে পাঠাবেন। তা না করে রোজই সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। দলের মুখপাত্র হয়ে কাজ করছেন। এটা বাংলার মানুষের তো বটেই এবং সংবিধান বিরোধীও।’’
এর আগে রাজ্যপাল সাধারণত বিমানে যাতায়াত করতেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, তবে এ বারে ট্রেনে, বিশেষ করে দিনের যাত্রাতেই আগ্রহী ছিলেন তিনি। এ দিন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে শিলিগুড়ি আসার সময়ে মালদহে ট্রেন দাঁড়ালে বিজেপি নেতা, সাংসদ তাঁর সঙ্গে একান্তে দেখাও করেন। রবিবার সকালে তাঁর পাহাড়ে যাওয়ার কথা।
গুরুংয়ের আত্মপ্রকাশকে পাহাড় এর মধ্যেই রাজনৈতিক ভাবে কিছুটা উত্তপ্ত। গুরুংয়ের বিরোধিতা করে গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকটি মিছিল করেন বিনয় তামাংপন্থীরা। এ দিন অনীতের তালুক কার্শিয়াংয়ে মিছিল হয়। পাহাড় সূত্রে খবর, মিছিলে ভালই লোক হয়েছিল। বিকেলের মধ্যে মিরিকেও মিছিল হয়। সব জায়গা থেকেই এ দিন বিমলের উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’, ‘মুর্দাবাদ’ ধ্বনি ওঠে। পাহাড়ের পর্যবেক্ষকদের মতে, শাসক শিবিরের সঙ্গে বৈঠকের আগে এই ভাবে নিজেদের শক্তি জাহির করছে বিনয় শিবির।
রাজ্যপালও পাহাড় নিয়ে মুখ খুলেছেন এ দিন। তিনি জানান, কোন কাজ কাকে দিয়ে হবে, সেটা আগে জানা দরকার। তাঁর কথায়, ‘‘আয়করের কাজ করতে পুলিশের কাছে গেলে তো হবে না। সংবিধান থেকে সরে গিয়েছে ৩৭০ ধারা। রামমন্দিরের সমস্যা সমাধান হয়েছে। পাহাড় সমস্যারও চিরস্থায়ী সমাধান হবে— এ নিয়ে আমার মনে কোনও সংশয় নেই।’’
তাঁর সমস্যার উদাহরণ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মালদহের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘পরিযায়ী, হাথরস, খাদ্য সূচকের মতো দেশে অনেক সমস্যায় রয়েছে। সেগুলির সমাধান কী হচ্ছে, সেটার কথা মানুষ আগে জানতে চাইছে।’’
সদ্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ধনখড়। তার পরেই তাঁর উত্তরবঙ্গ সফর। সেখানে শুধু পাহাড় সমস্যা নয়, অন্য অনেক বিষয়েই তিনি কথা বলতে আগ্রহী, জানিয়েছেন ধনখড়। উপাচার্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, পর্যটন সমস্যা, চা শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনার মতো বিষয়ও আছে সেই তালিকায়। বিভিন্ন জেলা থেকে বিজেপি নেতা, সাংসদরা যে তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন, তার ইঙ্গিতও মিলেছে। তবে অন্য রাজনৈতিক দলের কেউ যাবেন কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy