বিশ্বনাথ সাহা। —নিজস্ব চিত্র।
পরিচয়পত্র ছাড়া ঘর ভাড়ার দাবি ছাড়াও ফূর্তি করার জন্য নানা ব্যবস্থার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক হোটেল মালিককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে চার যুবকের বিরুদ্ধে। বুধবার গভীর রাতে এনজেপি থানার নেতাজি মোড় লাগোয়া এলাকার ঘটনা। এদিন মালিকপক্ষের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বিশ্বনাথ সাহা নামের ওই হোটেল মালিককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে শিলিগুড়ি হাসপাতালে ও পরে মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর মাথায়, মুখে, ঘাড়ে জখম রয়েছে। হোটেলের তরফে অভিযুক্তদের একজনের নাম পুলিশকে জানানো হয়েছে। বাকিরা মুখ বেঁধে থাকায় তাদের চেনা যায়নি। হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশ খতিয়ে দেখছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা জানান, অভিযুক্তদের সকলকে চিহ্নিত করে ধরার চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দারা জানান, এনজেপির বিভিন্ন হোটেলে নানা অবৈধ কাজকর্ম চলার অভিযোগ বহু পুরানো। পুলিশ মাঝে মধ্যে অভিযানও চালায়। এনজেপি স্টেশনে ট্রেনে নেমে নানা রাজ্যের বহু যাত্রী গন্তব্যে যাওয়ার আগে ছোট-বড় হোটেলগুলিতে থাকেন। কিছু হোটেলে মদের আসর, দেহ ব্যবসার অভিযোগও মাঝেমধ্যে ওঠে। এনজেপি এলাকার হোটেল ব্যবসায়ীদের দাবি, একাংশ লোকজনের জন্য বরাবর এলাকার নাম খারাপ হয়। পুলিশের আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন।
এনজেপি এলাকার তৃণমূল নেতা প্রসেনজিৎ রায়ের দাবি, ‘‘অভিযোগ উঠতে পারে। তবে অনৈতিক কাজকর্ম হোটেলগুলিতে হয় না। তাই তো বিশ্বনাথবাবুকে মারধর খেতে হল। না হলে উনি নথিপত্র ছাডাই ঘর ভাড়া দিয়ে অভিযুক্তদের দাবি মেটাতেন। পুলিশের উচিত অবিলম্বে অভিযুক্তদের খুঁজে বার করা।’’
হোটেল মালিক বিশ্বনাথবাবুর আত্মীয় সঞ্জীব সাহা জানান, ৪টি ছেলে রাত ২টোর পর এসে হোটেলের ঘর চেয়েছিল। ঘর দেওয়ার সময় ম্যানেজার দীনেশ রায় পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে তারা তা দিতে রাজি হচ্ছিল না। তারপরে ফূর্তি করার জন্য নানা ব্যবস্থার কথা বলে। মদ্যপ অবস্থায় ছিল বলে হোটেল কর্মীরা জানিয়েছে। ম্যানেজার রাজি না হওয়ায় তাকে ধাক্কাধাক্কি করা হয়। মালিকের খোঁজ শুরু করে যুবকেরা। ম্যানেজার গোলমালের খবর দিতে ভাই হোটেলে যায়। সব শোনার পর যুবকদের বিশ্বনাথবাবু হোটেল থেকে বার হয়ে যেতে বলেন। সেই সময়ই ওরা তাঁকে মারধর শুরু করে। তাঁর কথায়, ‘‘ভাইয়ের নাক ভেঙে গিয়েছে। ১ জনের মুখ খোলা ছিল। বাকিরা রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে ছিল।’’
কয়েকজন ব্যবসায়ীর অভিযোগ, অভিযুক্তদের মধ্যে যে যুবককে চেনা গিয়েছে, সে তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত। এই প্রসঙ্গে এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা তৃণমূল নেতা জয়দীপ নন্দী বলেন, ‘‘সবাই তো আমাদের সমর্থক। পুলিশ ব্যবস্থা নিক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy