অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলার উপর অত্যাচার চালিয়ে তাঁর ভ্রূণ নষ্ট করার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। এরপর গুরুতর জখম অবস্থায় ওই মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে সেখানেই তিনি মারা যান। এই ঘটনায় মৃতার স্বামী ও এক দেওরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্ৰাম ব্লকের কুমারগ্রাম দুয়ার এলাকার ঘটনা। কুমারগ্ৰাম দুয়ার বাসিন্দা পেশায় কৃষক ধনেশ দাস পুলিশের কাছে জানান, তাঁর মেয়ে সাত বছর আগে পাশের পুখরীগ্ৰামের বাসিন্দা রঞ্জিত দাসের বাড়িতে পরিচারিকা কাজ নেন। তাঁর অভিযোগ, রঞ্জিত তাঁর মেয়ের সঙ্গে তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে দিনের পর দিন শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করে। এর জেরে তাঁর মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রামের লোকের চাপে তাঁর মেয়েকে বিয়ে করে রঞ্জিত। পণ বাবদ তারা অনেক টাকা দাবি করে। তবে তিনি বিয়েতে ১৮ হাজার টাকা পণ দিতে পেরেছিলেন।
ধনেশ আরও জানান, বিয়ের পর মেয়ের একটি পুত্রসন্তান হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই তাঁর মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু হয়। এর আগে দু’বার মেয়ে গর্ভবতী হন। দু’বারই চাপ দিয়ে তাঁর গর্ভপাত করানো হয়। তিনমাস আগে তাঁর মেয়ে ফের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে গর্ভপাত করানোর জন্য চাপ দিতে থাকে। রাজি না হওয়ায় তারা তিনচার দিন আগে তাঁর মেয়ের উপর অমানুষিক অত্যাচার করা হয়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়ে। সেখানেই মঙ্গলবার রাতে তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়।
এরপর ধনেশ বুধবার বিকেলে আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপারের কাছে তাঁর জামাই, মেয়ের শ্বশুর-শাশুড়ি এবং দুই দেওরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে মৃতার স্বামী ও তাঁর এক দেওরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন মৃতার বাবা। আলিপুরদুয়ারের স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য রাতুল বিশ্বাস জানান, মৃতার বাবা আর্থিকভাবে দুর্বল। তাই তাঁর হয়ে পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। এরপর তাঁরা বিষয়টি মহিলা কমিশনকেও জানাবেন।
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ জানান, দুই অভিযুক্তকে ধরা হয়েছে। বাকিদের দ্রুত ধরা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy