Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Jalpaiguri Mal River Disaster

বিসর্জনের সময় হড়পা বানের পর মাল নদীর দ্বীপে আটকে অনেকে, উদ্ধারে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী

বুধবার রাত তখন ১০টা। মালবাজার এলাকায় মাল নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের জন্য নদীর ধারে উপস্থিত হয়েছিলেন বহু মানুষ। সেই সময় ঘটে বিপত্তি।

বিসর্জনে বিপত্তি।

বিসর্জনে বিপত্তি। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালবাজার শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২২ ২৩:৪৬
Share: Save:

নদীতে চলছিল প্রতিমা বিসর্জন। সেই সময়ে ধেয়ে এল ভয়াবহ বিপদ। জলপাইগুড়ির মালবাজারে নদীতে আটকে পড়াদের উদ্ধারে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী নামল প্রশাসন। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন পুলিশ এবং প্রশাসনিক কর্তারাও। মাল নদীর মাঝে একটি দ্বীপে আটকে পড়েন বেশ কয়েক জন।

বুধবার রাত তখন সাড়ে ৮টা। মালবাজার এলাকায় মাল নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের জন্য নদীর ধারে উপস্থিত হয়েছিলেন বহু মানুষ। বিসর্জনের জন্য প্রতিমা নিয়ে আসা হয়েছিল ট্রাকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ১০টিরও বেশি ট্রাকে চড়ে মানুষ এসেছিলেন বিভিন্ন প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রায়। প্রতিমা নিরঞ্জন যখন পুরোদমে চলছে তখন আচমকা ধেয়ে আসে হড়পা বান। সে দিকে খেয়াল ছিল না কারও। তার জেরে নদীতে যাঁরা নেমেছিলেন তাঁদের অনেকেই স্রোতের টানে ভেসে যান। ট্রাকও স্রোতের টানে ভেসে যায়। মাল নদীর মাঝে একটি চর রয়েছে। সেই চরে উঠে প্রাণ বাঁচান অনেকে। আবার এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অনেকে নিখোঁজ বলেও দাবি করেছেন নদীর আশপাশে থাকা স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন প্রশাসনিক কর্তারা। পৌঁছেছে দমকল এবং পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের মন্ত্রী বুলু চিকবড়াইকও। পাশাপাশি, নামানো হয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। যাঁরা নদীর মাঝে চরে আটকে ছিলেন তাঁদের কিছু ক্ষণের মধ্যে উদ্ধার করা হয়।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সাত জনের দেহ পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু। তাঁদের দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে স্থানীয় হাসপাতালে। ওই দেহগুলি ময়নাতদন্ত করা হবে। তবে কত জন ভেসে গিয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব নয় বলেও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তার কারণ, স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই সময় নদীতে অনেকে নেমেছিলেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১১ জনকে উদ্ধার করে মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। জেলাশাসক আরও জানিয়েছেন, নদীর চরে আটকে রয়েছেন ২০ জন। রাতে উদ্ধারকাজ চালানো হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। মাল নদীর যেখানে প্রতিমা বিসর্জন হচ্ছিল সেখানে যথেষ্ট আলো রয়েছে। কিন্তু নদীর অন্যত্র উদ্ধারকাজ চালানো হলে রাতে ব্যবস্থা করতে হতে পারে। সেই দিকগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে।

জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, ‘‘রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ হড়পা বান নেমেছিল। তার জেরে কয়েক জন ভেসে যান। তাঁদের মধ্যে সাত জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। কয়েক জন নদীর মাঝে একটা চরে আশ্রয় নেন। যাঁরা আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁদের সকলকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও নদীতে তল্লাশি অভিযান জারি রয়েছে। নদীর ধার খালি করে দেওয়া হয়েছে। উদ্ধার কাজে রয়েছে, পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনি এবং অসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE