‘‘পরীক্ষায় নকল করে পাশ করলেও, জীবনের পরীক্ষায় নকল করে পাশ করা যাবে না। তা হলে লাভ কী হল?’’— মাধ্যমিক শুরুর দু’দিন আগে পরীক্ষার্থীদের সামনে এমনই প্রশ্ন রাখলেন জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার উমেশ খণ্ডবহালে।
শনিবার জেলা পুলিশ সুপার মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ‘জরুরি পরামর্শ’ দিতে সমাজমাধ্যমে ‘লাইভ’ বক্তব্য দেন। নকল ঠেকাতে পড়ুয়াদের সতর্ক করেন তিনি। এসপি বলেন, “সব কিছুই নজরে রাখব। নকল করে কেউ পরীক্ষায় পাশ করতে পারে, কিন্তু পরীক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে, জীবনের পরীক্ষায় নকল করে পাশ করা যায় না।”
জলপাইগুড়ি জেলায় ৯০টি পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। সবগুলিতেই চূড়ান্ত সতর্কতা জারি হয়েছে। গত বছর শহর লাগোয়া একটি স্কুলে পরীক্ষার্থীদের নকলে বাধা দেওয়ায় ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছিল। জেলা পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, ভাঙচুরের মতো পরিস্থিতি রুখতে প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ থাকবে। যে স্কুলে গোলমালের আশঙ্কা থাকবে, সেখানে পদস্থ অফিসারদের রাখা হবে।
জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের সমাজমাধ্যমের ‘পেজ’ থেকে এ দিন পরীক্ষার্থীদের নানা পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশ সুপার। নিজের পরীক্ষার মজাদার স্মৃতির কথাও জানিয়েছেন। তিনি যখন মহারাষ্ট্রের স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন, সেই সময় অ্যাডমিট কার্ড নিতে ভুলে গিয়েছিলেন। পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনোর পরে ফের সাইকেলে বাড়িতে ফিরে অ্যাডমিট কার্ড নিতে হয়েছিল।
জলপাইগুড়ি জেলায় যানজটে যাতে পরীক্ষার্থীদের আটকে পড়তে না হয়, সে কারণে ৩৬টি ট্র্যাফিক সহায়তা কেন্দ্র খোলা হচ্ছে জেলায়। এসপি জানান, জেলা পুলিশের উইনার্স টিম, পিঙ্ক পেট্রল বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে মোতায়েন থাকবে। কোনও পরীক্ষার্থীর প্রয়োজনে মহিলা পুলিশের দল সহযোগিতা করবে।
১৬ মিনিট ‘লাইভ’ হয়েছে জেলা পুলিশের সমাজমাধ্যমে। এসপি পরীক্ষার্থীদের নানা পরামর্শ দিয়েছেন। তিন ঘণ্টার পরীক্ষায় সব কিছু লেখা বা নিজেকে প্রমাণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, “এটি একটি পরীক্ষা মাত্র। ভাল হতে পারে, না-ও হতে পারে। জীবনে এখনও অনেক চলার পথ বাকি। সকলকে সফল হতে হবে। সফল হওয়া মানে শুধু নম্বর বেশি পাওয়া নয়, ভাল ব্যক্তিত্বও তৈরি করা।” কারা নকল করছে বা করার চেষ্টা করছে, কারা স্কুলে ভাঙচুরে মদত দিচ্ছে, সব পুলিশের নজর থাকবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। তিনি জানিয়েছেন, সব পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে-বাইরে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)