প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। — ফাইল চিত্র।
দম্পতিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগের তদন্তভার কেন সিবিআইয়ের হাতে দেওয়া হবে না প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। বুধবার হাই কোর্টে মামলাটির শুনানির সময়ে জেলা পুলিশের তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। যদিও বিচারপতি একই সঙ্গে জানিয়েছেন, বর্তমানে সিবিআই মামলার ভারে জর্জরিত। সরকারি আইনজীবীদের একাংশের দাবি, বিচারপতি এই তদন্তে ‘সিট’ (বিশেষ তদন্তকারী দল) গঠনের ইঙ্গিতও দিয়েছেন। আগামী শুক্রবার মামলাটির পরবর্তী শুনানি হবে।
দম্পতিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের যুব সভাপতি তথা পুরসভার উপপুরপ্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূলের পুর প্রতিনিধি সন্দীপ ঘোষ-সহ চার জন। পরে, অভিযুক্তের তালিকায় আরও এক জনের নাম যোগ হয়। গত ১ এপ্রিল দম্পতির মৃত্যুর দিনই শোয়ার ঘর থেকে ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার হয়। তাতে সৈকতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়। তার পরদিনই দম্পতির আত্মীয় তথা বিজেপির ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় সৈকত-সহ ‘সুইসাইড নোট’-এ নাম থাকা চার জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়েরের পরেও পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না নালিশ জানিয়ে মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার আবেদন করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন শিখা চট্টোপাধ্যায়। সে মামলার প্রথম কয়েক দিন শুনানি কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি মান্থার কোর্টেই হয়। এবং তার পরে মামলাটি জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে পাঠানো হয়। সার্কিট বেঞ্চ আপাতত মুলতুবি হওয়ার পরে, ফের বিচারপতি মান্থার ঘরেই মামলাটির শুনানি শুরু হয়েছে।
এ দিন আদালতে শুনানির সময়ে বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন সব মামলার ক্ষেত্রেই কি পুলিশ এত ধীর গতিতে পদক্ষেপ করে?
মামলার আবেদনকারীদের আইনজীবী কল্লোল মণ্ডল এ দিন আদালতে দাবি করেছেন, ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার করা হলেও, নিয়ম অনুযায়ী, তা দ্রুত নিম্ন আদালতে পাঠানো হয়নি। ২ এপ্রিল অভিযোগ দায়ের হলেও, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেনি পুলিশ এবং মামলাটি হাই কোর্টে আসার পরে, পুলিশ নড়ে বসেছে। রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবীদের বক্তব্য ছিল, ‘সুইসাইড নোট’ আসল কি না, তা সন্দেহ ছিল। যদিও বিচারপতি প্রশ্ন করেন, যে সব মামলার ক্ষেত্রেই কি পুলিশ এত ধীর গতিতে এগোয়?
জেলা পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, আইন মেনেই তদন্ত এগিয়েছে। ইতিমধ্যে দু’জন অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে। এ দিন ওই দম্পতির কন্যা তানিয়া ভট্টাচার্য বলেছেন, “হাই কোর্টের উপরে আস্থা আছে। আশা করি, মা-বাবাকে এক সঙ্গে যাদের কারণে হারাতে হল, তাদের শাস্তি হবে। আমি এবং পরিবার সুবিচার পাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy