Advertisement
০৪ মে ২০২৪

লিপিকা কখনও কাঁদছেন, দুষছেন প্রেমিককে

২৯ জুলাই দুপুরে জলপাইগুড়ির কদমতলা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় ভাড়া বাড়িতে মৃত্যু হয় এলআইসির ডেভেলপমেন্ট অফিসার উত্তম মোহান্তর৷ উত্তমবাবুর স্ত্রী লিপিকা ও তার প্রেমিক অনির্বাণ রায় ষড়যন্ত্র করে তাকে খুন করেছে বলে অভিযোগ করেন উত্তমবাবুর পরিবার।

লিপিকা মোহান্ত।—ফাইল চিত্র।

লিপিকা মোহান্ত।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৭ ০৩:০০
Share: Save:

কখনও কাঁদছেন একা একা৷ কখনও আবার প্রেমিক অনির্বাণ সম্পর্কে উগরে দিচ্ছেন একরাশ ক্ষোভ ও বিরক্তি।

স্বামী খুনে অভিযুক্ত স্ত্রী লিপিকার আচমকা এই পরিবর্তনে রীতিমত অবাক পুলিশ কর্মীরা৷ তাঁদের দাবি, অনির্বাণের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি যে তার মস্ত বড় ভুল ছিল, জেরার সময় নানা প্রশ্নের উত্তরে তা বারবার বুঝিয়ে দিতে শুরু করেছেন লিপিকা৷ তবে তদন্তের মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতেই তিনি এমনটা করছেন কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷

২৯ জুলাই দুপুরে জলপাইগুড়ির কদমতলা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় ভাড়া বাড়িতে মৃত্যু হয় এলআইসির ডেভেলপমেন্ট অফিসার উত্তম মোহান্তর৷ উত্তমবাবুর স্ত্রী লিপিকা ও তার প্রেমিক অনির্বাণ রায় ষড়যন্ত্র করে তাকে খুন করেছে বলে অভিযোগ করেন উত্তমবাবুর পরিবার। তারই ভিত্তিতে ঘটনার পরদিন গ্রেফতার করা হয় লিপিকাকে৷ ততক্ষণে অবশ্য গা ঢাকা দেয় অনির্বাণ৷ তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ৷

পুলিশ জানিয়েছে, লিপিকা দাবি করেছেন, দ্বিতীয়বার পালিয়ে গিয়ে ফিরে আসার পর উত্তমবাবুর সঙ্গে তার সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছিল৷ তাই অনির্বাণের থেকে সরে যেতেও চেয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু অনির্বাণ তা হতে দেয়নি৷ উত্তমবাবু লিপিকার হাতে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় অনির্বাণকেও আর টাকা দিতে পারতেন না৷ টাকা না পেয়ে অনির্বাণ একদিন তাকে চাকু দেখিয়ে সোনা দিয়ে বাধানো হাতের শাখা ও কানের দূল ছিনিয়ে নেয় বলেও জেরায় জানিয়েছেন লিপিকা। টাকা না পেলে বা সম্পর্ক ভাঙলে তাকে মেরে ফেলবে বলে অনির্বাণ হুমকিও দেয় বলেও তার অভিযোগ৷ এই পরিস্থিতিতে উত্তমবাবু কখনও তার মেয়েকে টাকা দিলে মেয়ের থেকে টাকা চেয়ে নিয়ে তিনি অনির্বাণকে দিতেন বলে পুলিশের জেরায় জানিয়েছে লিপিকা৷

গ্রেফতার হওয়ার পর প্রথম দিকে শক্ত থাকলেও, এখন জেরার সময় অনেকটাই হতাশ দেখাচ্ছে লিপিকাকে৷ ইদানিং তাকে একা একা বেশ কয়েকবার ফুপিয়ে কাঁদতেও দেখেছেন পুলিশ কর্মীরা৷ পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আসলে অনির্বাণের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি যে ভুল ছিল সেটাও এখন বুঝতে পারছেন লিপিকা৷ সেজন্যই মাঝে মধ্যেই অনির্বাণ সম্পর্কে ক্ষোভও দিচ্ছে৷’’ পুলিশের দাবি, জেরায় অনির্বাণের সম্পর্কে তিনি এমনটাও বলছেন, ‘‘যার জন্য এত ত্যাগ করলাম, বিপদের সময় সে-ই আমায় একা ফেলে পালিয়ে গেল।’’ তবে পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘তার এই বক্তব্যগুলি সবটাই আমরা খতিয়ে দেখছি৷ তদন্তের মুখ ঘুরিয়ে দিতে সে এ সব বলছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷’’ অনির্বাণের খোঁজেও তল্লাশি চলছে বলে জানান ওই পুলিশ কর্তা৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE