Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Sudhani River drying

নদী যাচ্ছে ‘চুরি’, হেলদোল নেই কারও

ভুক্তভোগীরা দাবি করছেন, সরকারি দফতরের কিছু কর্মীর সঙ্গে রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা প্রোমোটারদের তৈরি হয়েছে গোপন আঁতাঁত।

Sourced by the ABP

মেহেদি হেদায়েতুল্লা
চাকুলিয়া শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৪০
Share: Save:

উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ার বেলনে যে সুধানী নদীর উপরে এক সময় নির্ভর করত এলাকার কৃষিকাজ, এখন সে নদীই হয়ে উঠেছে ‘কৃষিজমি’! এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে কোথাও নদীর বুকেই তৈরি হচ্ছে বসত বাড়ি। বেআইনি ভাবে গজিয়ে উঠেছে দোকানপাট। নদী বুজিয়ে জমি-মাফিয়াদের ‘দাপট’ এখন গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে সকলের। অথচ, অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন থেকে শুরু করে রাজনীতির কারবারিরা সে ব্যাপারে নীরব।

ভুক্তভোগীরা দাবি করছেন, সরকারি দফতরের কিছু কর্মীর সঙ্গে রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা প্রোমোটারদের তৈরি হয়েছে গোপন আঁতাঁত। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক দিঘলির একাধিক বাসিন্দার প্রশ্ন, শাসক দলের নেতাদের প্রশ্রয় না থাকলে কী ভাবে প্রকাশ্যে নদী ভরাট হয়ে যায়! স্থানীয় বাসিন্দা মোজাফ্ফর আলম বলেন , ‘‘নদী ভরাট করে মাফিয়ারা ছোট ছোট প্লটে বিক্রি করছে। নদী বুজিয়ে ফেলার সময়ে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের বারবার জানিয়েছিলাম। কোনও লাভ হয়নি। উল্টে,জমি মাফিয়ারা আমাকেই খুনের হুমকি দিয়েছিল।’’ পরিবেশবিদদের বক্তব্য, নদীর উপরে যে ভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে, আগামীতে নদী অস্তিত্ব হারিয়ে যাবে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, যে ভাবে নদী বিনা বাধায় দখল হয়ে যাচ্ছে, তাতে আগামীতে এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। সম্প্রতি বাসিন্দাদের একাংশ জমি- মাফিয়াদের বিরুদ্ধে সরব হয়ে চাকুলিয়া ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর এবং ব্লক প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। চাকুলিয়ার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক তমালতরু মিশ্র বলেন, ‘‘অভিযোগ এসেছে। সরেজমিনে তদন্ত করে পদক্ষেপ করা হবে। আইন অনুযায়ী, কোনও ভাবে নদী ভরাট করা যায় না। এবং এ ক্ষেত্রে আইন বেশ কড়া।’’

যদিও বেলন গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের প্রতিনিধি মকবুল হক বলেছেন, ‘‘নদী ভরাট হচ্ছে বলে আমার কাছে অন্তত তেমন কোনও খবর নেই।" তা হলে কোন মন্ত্রবলে দখল হয়ে যাচ্ছে নদী? তৈরি হচ্ছে বসতবাড়ি? প্রশ্নটা উঠছেই। এর কোনও সদুত্তর দিতে পারছেন না কোনও কর্তাই, অন্তত প্রকাশ্যে। যদিও জমির অবৈধ কারবারে জড়িতদের দাবি, ‘‘নদী দখলের প্রশ্ন নেই। নদীর চর থেকে কিছুটা দূরে কয়েকটি পরিবারের জমির খতিয়ান রয়েছে। সে জমিতে মাটি ভরাট হচ্ছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।" টাকা দিলেই কি নদী পাল্টে গিয়ে বাস্তুজমি হয়ে যায়? গোয়ালপোখর ২-এর বিডিও শ্যামল মণ্ডল বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chakulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE