Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Teesta Flash Flood

তিস্তার রুদ্ররূপ আর বৃষ্টির পূর্বাভাসে আতঙ্ক নদীপারে

এ দিন সকাল থেকেই গৌড়বঙ্গের তিন জেলায় বৃষ্টি শুরু হয়। তার মধ্যেই নদীর পার পরিদর্শনে যান প্রশাসনের কর্তারা।

পুনর্ভবার জলে রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন মালদহের বামনগোলার খুটাদহ গ্রামে। বুধবার।

পুনর্ভবার জলে রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন মালদহের বামনগোলার খুটাদহ গ্রামে। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
উত্তরবঙ্গ শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:১৮
Share: Save:

আকাশ কালো করে কখনও ঝিরঝিরে, কখনও আবার চলছে মাঝারি বৃষ্টি। বুধবার, প্রকৃতির এমনই রূপে ঘুম উড়েছে গৌড়বঙ্গের তিন জেলা-মালদহ ও দুই দিনাজপুরের নদীপারের বাসিন্দাদের। সিকিমে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদী ও নদী সংলগ্ন এলাকায় ভয়াবহ দুর্যোগের ছবি দেখে তাঁদের আতঙ্ক আরও বেড়ে গিয়েছে। আগামী দু’দিন ভারী বৃষ্টি হলে গৌড়বঙ্গের নদীগুলির জলস্তর আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। আশার কথা, এ দিন নদীর জলস্তর কমতে শুরু করেছে বলে সেচ দফতর জানিয়েছে। ত্রাণ শিবির থেকে অনেকেই বাড়িতে ফিরেছেন। তবে ফের, ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসে চিন্তায় মহানন্দা, পুনর্ভবা, টাঙন নদীপারের মানুষেরা।

আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী চার-পাঁচ দিন উত্তরবঙ্গের সব জায়গাতেই ভারী এবং কোথাও অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ড সংলগ্ন এলাকায় নিম্নচাপের ফলে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণ জলীয় বাষ্প উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ঢুকছে। গৌড়বঙ্গের তিন জেলাতেই বুধবার ভারী বৃষ্টি হয়। আজ, বৃহস্পতিবারও একই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘প্রবল বৃষ্টি চলবে। সঙ্গে কয়েকটি এলাকায় বাজ পড়ার ঘটনাও ঘটতে পারে।’’

এ দিন সকাল থেকেই গৌড়বঙ্গের তিন জেলায় বৃষ্টি শুরু হয়। তার মধ্যেই নদীর পার পরিদর্শনে যান প্রশাসনের কর্তারা। এ দিন ইংরেজবাজার শহরের মহানন্দা নদীর পারে পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে যান জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া। নদীপারের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরানোর নির্দেশ দেন তিনি। জেলাশাসক বলেন, “মহানন্দা নদীপারের বাসিন্দাদের সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। জেলার অন্যান্য ব্লক নিয়েও আমরা সতর্ক রয়েছি। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে।”

দক্ষিণ দিনাজপুরে পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক নয় বলে জানান জেলা প্রশাসনের কর্তারা। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘এখন জেলার কেউ কোনও ত্রাণ শিবিরে নেই। আগামী দু’দিন বৃষ্টি হতে পারে। তবে তাতে আশঙ্কার
কিছু নেই।’’

প্রশাসনের দাবি, মালদহের বামনগোলা, গাজল এবং উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ, ইটাহার, ইসলামপুরের একাংশ গ্রাম এখনও জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। এক সপ্তাহ আগের বৃষ্টিতে ব্লকগুলির একাধিক রাস্তা ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে বহু গ্রামে। এ দিন পুরাতন মালদহের মুচিয়ার লক্ষ্মীপুর গ্রামের রাস্তা টাঙনের জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে। সে গ্রামের বহু বাড়ি জলের তলায় রয়েছে।

এ ছাড়া কয়েকশো বিঘা চাষের জমি জলমগ্ন। জমি থেকে জল দ্রুত নেমে গেলে চাষের ক্ষতি তেমন হবে না, দাবি কৃষি আধিকারিকদের। কালিয়াগঞ্জের কৃষি আধিকারিক মৌমিতা ঘোষ বলেন, “বৃষ্টির জেরে এখনও পর্যন্ত জেলায় চাষের ক্ষতির কোনও খবর নেই। তবে, ফের একটানা বৃষ্টি হলে জমিতে জল জমে ধান ও আনাজের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Teesta River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE