অমিত শাহের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক বিরোধিতা এক চরম জায়গায় পৌঁছেছে। —ফাইল চিত্র।
কাল, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে লোকসভা ভোটকে ঘিরে পাহাড়ের দুই জেলা সরগরম হতে চলেছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ১১ এপ্রিল দুপুরে দার্জিলিং সুপার মার্কেট এলাকার জনসভা করবেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়ই, কালিম্পং-র গ্রাহামস হোমের মাঠে বিজেপি প্রার্থীর হয়ে সভা করতে আসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। যুযুধান দুই নেতানেত্রীর সভাকে ঘিরে দুই তরফে তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে।
প্রথমে একই দিনে দার্জিলিঙে সভার জন্য প্রশাসনের অনুমতি চেয়েছিল বিজেপি। শৈলশহরের গোর্খা স্টেডিয়ামে সভার করার জন্য আবেদন করা হয়। কিন্তু একই দিনে দার্জিলিঙের মতো ছোট পাহাড়ি শহরে দুই ভিভিআইপি’র নিরাপত্তা, ট্র্যাফিক ব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলার কথা মাথায় রেখে বিষয়টি সমস্যার বলে বিজেপিকে প্রশাসনিক স্তরে জানানো হয়। এর পরেই অমিত শাহের জন্য চূড়ান্ত করা হয় কালিম্পং। দু’দিন আগেই অবশ্য সেখানে একটি সভার আবেদনই করেছিল বিজেপি।
দলের উত্তরবঙ্গ জোনের আহ্বায়ক রথীন বসু বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার আমাদের সর্বভারতীয় সভাপতি আসছেন। কালিম্পঙে সকালে সভা করবেন। তার পরে উনি বিকেলে রায়গঞ্জের সভায় যোগ দেবেন।’’
দলীয় সূত্রের খবর, ওই দিন দিল্লি থেকে বিমানে অমিত শাহ বাগডোগরা আসবেন। তার পরে হেলিকপ্টারে কালিম্পং পৌঁছবেন। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সভা। তার পরে কালিম্পংয়েই বিজেপি সভাপতি’র মধ্যাহ্নভোজন করার কথা। তার পরে হেলিকপ্টারে রায়গঞ্জে চলে যাবেন তিনি। পরে, বাগডোগরা এসে রাতেই দিল্লিতে ফিরবেন।
তবে মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু ওই দিন পাহাড় ছাড়ছেন না। সুপার মার্কেটের সভার পরে সন্ধ্যায় বিভিন্ন জনজাতির বোর্ড, স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের কথা রয়েছে। পরের দিন, শুক্রবার তিনি দার্জিলিং থেকে কার্শিয়াং নেমে আসবেন। সেখানে দুপুরে প্রার্থী অমর সিংহ রাইয়ের সমর্থনে আর একটি সভা করবেন। রাতে শিলিগুড়ি ফিরে সেখানেই থাকবেন। শনিবার দুপুরে বাঘাযতীন পার্কে আরও একটি জনসভা করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুধু পাহাড় বা শিলিগুড়ি নয়, ইতিমধ্যে দার্জিলিং লোকসভার নকশালবাড়িতে সভা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ, বুধবার ওই লোকসভার অন্তর্গত চোপড়াতেও একটি সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। জেলা তৃণমূল নেতারা বলেছেন, ‘‘বিজেপি নেতারা তো বসন্তের কোকিল। ভোট এসেছে, আর দিল্লি থেকে হুড়োহুড়ি করে পাহাড়ে আসা শুরু করেছেন। ভোট শেষ হলে এদের আর দেখা যায় না।’’
দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘শুধু ভোট নয়, সারা বছরে প্রায় প্রতি মাসেই নিয়ম করে মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে আসেন। আর সেখানে গত আন্দোলনের সময় থেকে স্থানীয় বিজেপি সাংসদ বা কোনও কেন্দ্রীয় নেতাকে পাহাড়ে যায়নি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘ভোট আসতেই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভাজনের রাজনীতি করতে বিজেপির নেতারা এখন পাহাড়ে যাচ্ছেন। ভোটে মানুষ এর জবাব দেবে।’’
সোমবারই বিজেপি লোকসভা ভোটের ইস্তাহার প্রকাশ করেছে। সেখানে দার্জিলিং প্রসঙ্গে আলাদা রাজ্য বা গোর্খাল্যান্ডের দাবির কোনও উল্লেখ নেই। শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এ বার পাহাড়ে এসে নতুন করে পাহাড়বাসীকে অমিত শাহ কিছু বলেন কি না, সেই দিকেই তাকিয়ে আছেন পাহাড়বাসী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy