Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
চিন্তা বেড়েছে তৃণমূল নেতাদের, উচ্ছ্বাস বিজেপিতে
general-election-2019-west-bengal

পা বাড়িয়ে কি অনেকে, প্রশ্ন

শুধু টেলিফোন বা আলোচনা নয়, বিজেপি নেতাদের দাবি, ভোটের হাওয়ার উঠতেই অনেকে তলতলে যোগাযোগ রেখেছেন।

তৎপর: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে ভোট গণনার প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র

তৎপর: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে ভোট গণনার প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র

কৌশিক চৌধুরী 
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৯ ০৫:৫২
Share: Save:

হিলকার্ট রোডের চায়ের দোকানগুলিতে ভোরবেলা প্রাতঃভ্রমণকারীর ভিড় লেগেই থাকে। যেমন দেখা যায়, বিধান মার্কেটের চা-কফির দোকান বা টোস্টের কেবিনগুলিতে। রবিবার টিভি জুড়ে পরপর বুথফেরত সমীক্ষার পরে সোমবার সকাল থেকে চায়ের কাপে ঝড়। সকলের মুখেই একই কথা, তা হলে তো মোদী আসছে! পাশের এলাকায় পরপর একাধিক বাজার। সেখানেও বেশির ভাগের হাতে খবরের কাগজ আর মুখে একই কথা।

সেই সময়ই এক শাসকদলের নেতাকে দেখা গেল, বাজারে। কানে মোবাইল, হাতে বাজারের ঝোলা। ফোন শেষ করে বললেন, ‘‘আমাদের ফল কি এতটা খারাপ হবে? বিশ্বাস হচ্ছে না।’’ পরক্ষণেই বললেন, ‘‘আমার তো গেরুয়া শিবিরের পরিচিত কয়েক জনের সঙ্গে রাতে কথাও হয়েছে। ওরা খুব আত্মবিশ্বাসী মনে হল। আগামী বছর আমাদের এখানে পরপর দু’টি ভোট। সে সবের কথাও বললেন। কত জন যে আমাদের দিক থেকে ও দিকে লাফ দেবে!’’

শুধু টেলিফোন বা আলোচনা নয়, বিজেপি নেতাদের দাবি, ভোটের হাওয়ার উঠতেই অনেকে তলতলে যোগাযোগ রেখেছেন। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘গত সপ্তাহেই টিএমসিপি-র কয়েক জন যোগ দিয়েছেন। এর পরে শাসকদল ছাড়াও বাম, কংগ্রেস থেকেও অনেকে যোগ দেবেন। জনপ্রতিনিধিরাও ধীরে ধীরে আসবেন।’’ যা শুনে তৃণমূলের কয়েক জন জেলা নেতা বলছেন, ‘‘আগে বুথফেরত সমীক্ষা তো মিলুক, তার পরে দেখা হবে। এখন ভোটগণনা নিয়ে সবাই ব্যস্ত।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিজেপি সূত্রের খবর, এ বার বিজেপির নিশানা, পুরসভা এবং মহকুমা পরিষদের ভোটে নিজেদের অস্তিত্ব জোরালো ভাবে জানান দেওয়া। নেতাদের কেউ কেউ বলছেন, ‘‘তৃণমূলের থেকে মুখ ফেরাচ্ছে জেলার মানুষ। নেতানেত্রীরাও তা বুঝছেন। কংগ্রেস ও বামেরা ক্ষয়িষ্ণু। তা হলে সবাই কোথায় যাবে! ভিড় তো আমাদের পার্টি অফিস ঘিরেই তৈরি হবে। শহরের তুলনায় মহকুমার গ্রামীণ এলাকাগুলিতে দ্রুত দলবদল শুরু হবে। বুথফেরত সমীক্ষা মিলে গেলে এবং কেন্দ্রে মোদী সরকার হলে আগামী কয়েক মাসেই সংগঠন বহরে অনেকটা বেড়ে যাবে।’’

গেরুয়া শিবির সূত্রের খবর, শহর ছাড়াও ফুলবাড়ি, ইস্টার্ন বাইপাস, ভক্তিনগর, চম্পসারি এনজেপি মতো এলাকা এবং মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি এবং খড়িবাড়ির ব্লকের বেশ কিছু বড় নেতানেত্রী এত দিন শুধু যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করে গিয়েছেন। এ বার দলে যোগ দিয়ে দেবেন।

দলের শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরী বলছেন, ‘‘রবিবার থেকে ফোন আর ফোন। কাউন্সিলরও আছেন। সকলেই দলে আসার জন্য পা এগিয়ে রাখছেন।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘এখন যাঁরা আসতে চাইছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে যাচাই করে তবেই দলবদল করানো হবে।’’

বিজেপির কথায় অবশ্য আমল দিতে রাজি নন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতম দেব বা শহরের মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। গৌতম বলছেন, ‘‘যাঁরা যেতে চান, চলে যান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো বলেছেন, কাউকে আটকানোর বিষয় নেই। আমরা নতুন কর্মী তৈরি করব।’’ আর শিলিগুড়ির মেয়র অশোকের কথায়, ‘‘এখনও যাঁরা বামফ্রন্ট করেন, তাঁরা কেউ ওদিকে পা মাড়াবেন না। ও সব বিজেপি নেতারা বলে বাজার গরম করছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE