Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
GI Tag

GI Tag: সুলতানি আমল থেকে রসকদম্বে রসনাতৃপ্তি, জিআই তকমা চেয়ে আবেদন

মালদহে এখন সুলতানি আমলের টাঁড়ার খাজা নেই। হারিয়ে গিয়েছে মনোহরা। আধুনিকতার ধাক্কায় উধাও মনাক্কাও।

মালদহের বিখ্যাত রসকদম্ব। নিজস্ব চিত্র

মালদহের বিখ্যাত রসকদম্ব। নিজস্ব চিত্র

জয়ন্ত সেন
মালদহ শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২২ ০৭:২৪
Share: Save:

রসগোল্লার পেটেন্ট বাংলা পাওয়ার পর রসকদম্বের পেটেন্ট মালদহ যাতে পায় সেই দাবি উঠেছিল। কিন্তু তার পর এ নিয়ে আর উচ্চবাচ্য হয়নি। মালদহের সুলতানি আমলের এই মিষ্টির জিআই তকমার জন্য এ বারে কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের পেটেন্ট, ডিজ়াইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কস-এর কন্ট্রোলার জেনারেলের কাছে আবেদন করল মালদহ ম্যাঙ্গো মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। পাশাপাশি এ ব্যাপারে তারা ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি দফতরেও চিঠি দিয়েছে।

মালদহে এখন সুলতানি আমলের টাঁড়ার খাজা নেই। হারিয়ে গিয়েছে মনোহরা। আধুনিকতার ধাক্কায় উধাও মনাক্কাও। কিন্তু সেই সুলতানি আমল থেকেই মালদহে এখনও দিব্যি আছে রসকদম্ব। বাংলার মিষ্টি মেলায় কলকাতার রসগোল্লা কিংবা মুর্শিদাবাদের ছানাবড়াকে বরাবর টেক্কা দিয়েছে মালদহের এই মিষ্টি। সুলতানি আমলের রসকদম্বের কদর এখন রাজ্য, দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও। দেখতে ঠিক কদম ফুলের মতো, তাই নাম রসকদম্ব। মিষ্টির ভেতরে ছোট্ট রসগোল্লা। ওপরে ক্ষীরের প্রলেপ। গায়ে জড়ানো পোস্ত মাখানো চিনি। পোস্তর দাম বেড়ে যাওয়ায় ইদানিং শুধু চিনির দানা ব্যবহার শুরু হয়েছে। মালদহের কোনও অনুষ্ঠানে রসকদম্ব থাকবে না এমনটা কেউ ভাবতেই পারে না। বন্ধু বা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে গেলে এই মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে যাওয়া এখনও রীতিমতো প্রথা। জামাই ষষ্ঠীতে শাশুড়ির হাতে রসকদম্ব তুলে দেওয়াও সংস্কৃতির অঙ্গ। পুজো এবং অন্য সামাজিক অনুষ্ঠানের দিনগুলিতে রসকদম্বের চাহিদা এতটাই বেড়ে যায় যে কারিগরদের ঘুম ছুটে যায়।

জানা গিয়েছে, প্রায় পাঁচশো বছর আগে সুলতান হোসেন শাহের আমলে প্রাচীন বাংলার রাজধানী গৌড়ে পা রাখেন মহাপ্রভু চৈতন্য দেব। গৌড়ের কেলি কদম্ব গাছের ছায়ায় চৈতন্যদেব দুই শিষ্য রূপ ও সনাতনকে দীক্ষা দেন। সেই কদম্ব গাছ থেকেই মালদহে রসকদম্ব মিষ্টির সূচনা বলে জনশ্রুতি। হয়তো তাই বৈষ্ণব সমাজে এই মিষ্টি অমৃতসমান।

এ বার এই রসকদম্বের পেটেন্টের ব্যাপারে সরব হল মালদহ ম্যাঙ্গো মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। মালদহের বিখ্যাত ফজলি, হিমসাগর ও লক্ষণভোগ আম ইতিমধ্যে জিআই তকমা পেয়েছে। এ বারে আশ্বিনা আম ও নবাবগঞ্জ এবং আশাপুরের বেগুনকে জিআই তকমা দিতে প্রস্তুতি নিয়েছে মালদহ জেলা প্রশাসন।

মালদহ ম্যাঙ্গো মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘মালদহ মানে যেমন আম, তেমনি মালদহের মিষ্টি মানে রসকদম্ব। সেই মিষ্টির পেটেন্ট বা জিআই তকমা পেতেই আমরা কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের পেটেন্ট, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কস-এর কন্ট্রোলার জেনারেলের কাছে আবেদন করেছি। পেটেন্ট পেলে রসকদম্ব মালদহের মিষ্টি বলেই আরও প্রতিষ্ঠিত হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

GI Tag Malda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE