ট্রেড লাইসেন্স করাতে ব্যবসায়ীদের কাছে কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক পুরসভা অতিরিক্ত টাকা চাইছে, অভিযোগ পেয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার শিলিগুড়িতে ‘নর্থ বেঙ্গল বিজ়নেস মিট’-এ ওই অভিযোগ পেয়ে রাজ্যের মুখসচিব মনোজ পন্থকে দেখতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগ মানেনি পুরসভাগুলি। উত্তরবঙ্গে ৯০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে বলে জানান মমতা।
ট্রেড লাইসেন্সের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলার ব্যবসায়ী সাকেতলোধা। বলেন, ‘‘অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্সের পরেও কলকাতা পুরসভার (কেএমসি) কাছ থেকে নোটিস আসে ডেভেলপমেন্ট ফি চেয়ে। কেন দেব?’’ ডালখোলা পুর-এলাকাতেও একই সমস্যা রয়েছে বলে দাবি তাঁর। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘অনলাইন আবেদন করার পরে কেএমসি নোটিস দিতে পারে না।’’ মুখ্যসচিবকে বলেন, ‘‘সরকার আর কেএমসি আলাদা নাকি? প্রত্যেককে বলছি, এটা হবে না। এটা মুখ্যসচিব দেখবেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ওদের নেওয়ার (টাকা) অধিকার নেই। ওরা নিজেদের আয়ের জন্য এ সব করে। এটা সমর্থন করি না। মুখ্যসচিবকে বলব, নির্দেশিকা দিতে।’’
কলকাতা পুরসভা সূত্রের দাবি, ট্রেড লাইসেন্সকে এখন ‘সার্টিফিকেট অব এনলিস্টমেন্ট’ বলা হয়। যে কোনও পুর-শহরভিত্তিক প্রশাসন নিজের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকায় তা দিতে পারে। ফর্মপূরণ করে টাকা দিলেই শংসাপত্র মেলে। তবে তার বাইরে টাকা চাওয়ার অভিযোগ রয়েছে বলে পুর-কর্তৃপক্ষের জানা নেই। ডালখোলার পুরপ্রধান স্বদেশ সরকারও বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনিনি। ভাল করে জেনে বলতে পারব।’’
সম্মেলনে কোচবিহারের ব্যবসায়ী সুরজকুমার ঘোষও ‘ট্রেড লাইসেন্স ফি’, ‘মিউটেশন ফি’, ‘সাফাই ফি’ নিয়ে পুরসভার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ জানান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন বেড়েছে? জানা নেই। আমি কর বৃদ্ধি করতে দিইনি। জলের উপরেও কর নিই না। এটা কেন হচ্ছে? বারণ করো।’’ এ সব বিষয়েও মুখ্যসচিবকে দেখতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে কোচবিহারের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি, ‘‘ফি বাড়েনি। পুরনো হারেই নেওয়া হচ্ছে।’’ উত্তরবঙ্গ সফর নিয়ে নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)