E-Paper

পাট্টা দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী, আগামী সপ্তাহে আসতে পারেন মমতা

বাগানের সমস্যা নিয়ে মার্চের প্রথম সপ্তাহে ফের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক শুরু হবে বলে জানান শ্রমমন্ত্রী। সেখানে মজুরি থেকে অন্য সমস্যা নিয়ে আলোচনা হবে।

সৌমিত্র কুণ্ডু

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৩৫
Picture of TMC leaders.

আলোচনা: শিলিগুড়িতে উত্তরকন্যায় মঙ্গলবার চা বাগান নিয়ে বৈঠকে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। রয়েছেন অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণমন্ত্রী বুলুচিক বরাইক ও আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

চা বাগানে তথা পাহাড়ে শ্রমিক পরিবারগুলিকে জমির পাট্টা বিলির ক্ষেত্রে বন্ধ ও লিজ়ের মেয়াদ পেরনো বাগানকে চিহ্নিত করেই কাজ শুরু করেছে প্রশাসন, যাতে কোনও আইনি জটিলতা বাধা না হয়। তা ছাড়া, বাগানের বস্তি এলাকাগুলিতেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাহাড়ের দু’টি বাগানে এ ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ে ওই দু’টি বাগান হল ধোত্‌রে এব‌ং সিমরিকপানি। কারণ, সব কিছু ঠিক থাকলে, আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি উত্তরবঙ্গ সফরে শিলিগুড়িতে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সে সময় তাঁর হাত দিয়েই পাট্টা বিলির চেষ্টা চলছে। বাগানগুলিতে স্বাস্থ্য পরিষেবা, ‘ক্রেশ’-এর মতো বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। তা নিয়ে মঙ্গলবার উত্তরকন্যায় ‘টি অ্যাডভাইসরি কাউন্সিল’-এর বৈঠক হয়। তার সদস্য শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণমন্ত্রী বুলুচিক বরাইক, ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর চিফ এগজ়িকিউটিভ অনীত থাপা, শান্তা ছেত্রীরা ছিলেন।

তবে শ্রমমন্ত্রী মলয় এ দিন জানান, পাট্টার বিষয়টি শ্রম দফতরের অধীনে নয়। ভূমি এবং ভূমি সংস্কার দফতর বিষয়টি দেখছে। অনীত বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে পাট্টা বিলির কথা রয়েছে। পাহাড়ের চা শ্রমিকদের এটা দীর্ঘদিনের দাবি।’’ দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বলেন, ‘‘বন্ধ চা বাগানগুলোয় পাট্টা দেওয়ার আমরা প্রথমে শুরু করছি। তা-ও সেখানকার বস্তিগুলোতে। বন্ধ বাগানগুলোর ক্ষেত্রে ওই সমীক্ষা করে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। ভূমি সংস্কার দফতর থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলে সে মতো কাজ হবে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চা বাগানের জমি লিজ়ে দেওয়া। পাট্টা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার তা নিজের হাতে নেবে। জেলাশাসক জানান, লিজ়ের শর্ত মেনে চা গাছ লাগানো হয়নি, এমন ফেলে রাখা জায়গা সরকার নিতে পারে। শ্রমিক বস্তিগুলির ক্ষেত্রেও তা করতে সমস্যা নেই। কেন না, সেগুলি ‘চা প্লান্টেশন এরিয়া’ নয়। বিশেষ করে ২৫, ৩০ বছর ধরে অনেক বস্তিতে শ্রমিক পরিবার রয়েছে। সেখানে বাসিন্দাদের অর্ধেক চা শ্রমিক, অর্ধেক অন্য ক্ষেত্রে শ্রমিকের কাজ করেন।

তরাই, ডুয়ার্স এবং পাহাড়ের বিভিন্ন চা বাগানে ‘ক্রেশ’ চালু এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি নিয়ে মূলত এ দিন বৈঠক হয়। বিভাগীয় কমিশনার অজিতরঞ্জন বর্ধন, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক, পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকরাও ছিলেন। শ্রমমন্ত্রী জানান, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি চা শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠক করে তাঁদের বিভিন্ন সুবিধার কিছু বিষয় ঘোষণা করেছিলেন। সেই মতো শ্রম দফতরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যাতে ‘ক্রেশ’, স্বাস্থ্যকেন্দ্র করা যায়। শ্রমমন্ত্রী বলেন, ‘‘সেই মতো ৪৩টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ৭০টি ক্রেশ করতে জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে টেন্ডারও হয়েছে। ক্রেশ পরিচালনার ভার উৎসাহী স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দেওয়া হবে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সরকারি চিকিৎসক, নার্স দেওয়া হবে।’’ বাগানের সমস্যা নিয়ে মার্চের প্রথম সপ্তাহে ফের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক শুরু হবে বলে জানান শ্রমমন্ত্রী। সেখানে মজুরি থেকে অন্য সমস্যা নিয়ে আলোচনা হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mamata Banerjee Siliguri TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy