Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

রাসমেলা উদ্বোধন করবেন না মমতা

ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড। মদনমোহন মন্দিরে ওই অনুষ্ঠান হয়। আরেকটি অংশে রাসমেলার মাঠে মেলার আয়োজন করে কোচবিহার পুরসভা। ওই অনুষ্ঠানের আলাদা করে উদ্বোধন হয়। তবে রাস উৎসবের দিন থেকেই রাসমেলা শুরু হওয়ার ঐতিহ্য রয়েছে কোচবিহারে।

এ বারে রাসমেলার যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ফাইল চিত্র।

এ বারে রাসমেলার যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:১৬
Share: Save:

বিতর্ক এড়াতে কোচবিহার রাসমেলার উদ্বোধন করবেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুরসভা সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ওই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে কোচবিহারের পুরপ্রধান ভূষণ সিংহের কাছে। শুধু তাই নয়, স্পষ্ট ভাবেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে চিরাচরিত প্রথা মেনে রাস উৎসবের দিনই রাসমেলার উদ্বোধন করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী ১৩ নভেম্বর কোচবিহার সফরে এসে রাসমেলায় যোগ দেবেন।

ভূষণ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে চিরাচরিত প্রথা মেনে ১১ নভেমম্বর থেকে রাসমেলা শুরু হবে। সেই বিষয়ে আরও বিস্তারিত পরে জানানো হবে।” কোচবিহার জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি অনুযায়ী আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোথাও যাতে কোনও খামতি না থাকে তা দেখা হবে।”

এ বারে কোচবিহারে রাস উৎসব শুরু ১১ নভেম্বর। ওই দিন বিশেষ পুজো করে রাসচক্র ঘুরিয়ে উৎসবের সূচনা করবেন কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদেয়ন। ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড। মদনমোহন মন্দিরে ওই অনুষ্ঠান হয়। আরেকটি অংশে রাসমেলার মাঠে মেলার আয়োজন করে কোচবিহার পুরসভা। ওই অনুষ্ঠানের আলাদা করে উদ্বোধন হয়। তবে রাস উৎসবের দিন থেকেই রাসমেলা শুরু হওয়ার ঐতিহ্য রয়েছে কোচবিহারে। একবার কলেরা রোগ ছড়িয়ে পড়ায় মেলা পিছিয়ে যায়।
এ বারে রাসমেলার যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে তাঁর দফতর থেকে জানানো হয়, ১৩ নভেম্বর কোচবিহার রাসমেলায় যাবেন। এর পরেই কয়েক দফায় বৈঠক সেরে পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১১ নভেম্বরের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে ১৩ নভেম্বর রাসমেলার উদ্বোধন করানো হবে। তা নিয়েই বিতর্ক শুরু হয় জেলায়।

মুখ্যমন্ত্রীর সফরের জন্য কেন মেলার ঐতিহ্য ভেঙে দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন তুলে ময়দানে নেমে পড়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিশেষ করে বিজেপির নেতারা এই সিদ্ধান্তকে জেলার পক্ষের ‘লজ্জা’র বলে প্রচার শুরু করে। বিজেপির নেতারা দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রীর কথা মানতে গিয়ে ঐতিহ্যশালী রাসমেলার উদ্বোধনও প্রশাসন পিছিয়ে দিচ্ছে পুরসভা। তার পরেই তৃণমূল নেতারা পাল্টা দাবি করেন, আগেও পিছিয়েছে রাসমেলা। এই বিতর্কের খবর পৌঁছে যায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।

এমনিতেই এ বারে কোচবিহার লোকসভা আসন তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। দলের সংগঠন অনেকটাই নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে দলের কোচবিহার জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে বিনয়কৃষ্ণ বর্মণকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
পার্থপ্রতিম রায়কে কার্য়করী সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার পরেও দলের হাল প্রায় একই রয়েছে। তাই এই সময়ে নতুন করে আর গোলমেলে যেতে চান না দলনেত্রী। দলীয় সূত্রের খবর, ওই বিতর্কের কথা জানার পরেই মুখ্যমন্ত্রী কোচবিহার রাসমেলা নিয়ে বিশদে খোঁজ নেন। এর পরেই নির্ধারিত সময়েই মেলার উদ্বোধনের নির্দেশ দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Bandyopadhyay Coochbehar Raasmela
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE