কোনও গাছ ভরেছে আমের মুকুলে, কোনও গাছে আবার মুকুলই নেই। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ বারে আমের মুকুলের এমনই ছবি মালদহের বাগানগুলিতে। গত তিন দিন ধরে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশার দাপট চলতে থাকায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে জেলার আম চাষিদের। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় এ বারে এখনও জেলার ১০০ শতাংশ গাছে মুকুল আসেনি, দাবি উদ্যান পালন দফতরের। দফতরের আধিকারিকদের দাবি, ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে জেলার সিংহভাগ আম গাছে মুকুল ফোঁটার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বার মরসুমের শুরু থেকেই জেলায় তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শীতের দাপট উধাও হয়ে যায়। মাঝামাঝি থেকে ফের জেলায় জাঁকিয়ে শীত পড়তে শুরু করে। এখন শুরু হয়েছে কুয়াশার দাপট। সকাল ৯টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে রাস্তাঘাট। কুয়াশা আমের মুকুলের জন্য ক্ষতিকারক। কুয়াশার পরে চড়া রোদ থাকলে মুকুলের খুব ক্ষতি হবে না, দাবি আধিকারিকদের। তাঁদের দাবি, মুকুলের গোড়ায় কুয়াশার জলকণা জমে থাকলে জল স্প্রে করতে হবে। উদ্যান পালন দফতরের উপ অধিকর্তা সামন্ত লায়েক বলেন, ‘‘শীতের প্রভাব কম থাকলেই আমের মুকুল ফুটতে শুরু করে। এ বারে মরসুমের প্রথম থেকেই আমের মুকুল আসতে শুরু করেছিল ঠিকই। তবে মাঝে প্রচণ্ড শীতের কারণে মুকুল আসা পিছিয়ে যায়। আশা করছি, ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে জেলার সিংহভাগ গাছেই মুকুল চলে আসবে।’’
জেলায় প্রায় ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। গত বছর জেলায় আড়াই লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছিল। এ বারে জানুয়ারির মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে জেলায় আমের মুকুল আসতে শুরু করে। তার ফলে আমের ফলন নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছিলেন কৃষকেরা। কিন্তু সে সময় জেলায় সমস্ত গাছে মুকুল আসেনি। এখন কোনও আমের গাছ মুকুলের ভারে ঢলে পড়ছে, কোনও গাছ আবার মুকুল শূন্য। জেলার আম চাষি কুরবান আলি বলেন, ‘‘সকাল পর্যন্ত কুয়াশায় ঢেকে থাকছে পরিবেশ। ঘন কুয়াশা আমের মুকুলের পক্ষে ভাল নয়। এ বার আমের উৎপাদন বেশি না হলে, লাভের মুখ আর দেখা হবে না।” মালদহের আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘আমের উপরে নির্ভর করে জেলার অর্থনীতি। বিরূপ আবহাওয়াতেও গাছের যত্ন নেওয়ার জন্য কৃষকদের উদ্যান পালন দফতরের পরামর্শ নিতে বলা হচ্ছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)