Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Dinhat Clash

রাতে পুলিশের অভিযান, ‘উদয়ন-ঘনিষ্ঠ’ ১৩ কর্মী ধৃত দিনহাটা-সংঘর্ষে

অভিযোগ, রবিবার বিকেলে দিনহাটার আমবাড়িতে এক বিজেপি নেতার বাড়িতে হামলা করে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। পুলিশ বাধা দিলে তাদেরও হেনস্থা করা হয়।

উদয়ন গুহ।

উদয়ন গুহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার, দিনহাটা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:৫৫
Share: Save:

দিনহাটায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের ঘটনায় রবিবার মধ্য রাতে আচমকা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহের ‘অনুগামী’ বলে পরিচিত বেশ কয়েক জনের বাড়িতে হানা দিয়ে ১৩ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। যে ঘটনায় জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। দলীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ভোর ৩টে নাগাদ মন্ত্রী জানতে পারেন, ওই কর্মীদের দিনহাটা থেকে কোচবিহার নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। তিনি পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। কেন পুলিশ হঠাৎ এতটা সক্রিয় হয়ে উঠল তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। সকালে উদয়ন গুহর টিপ্পনী, “রাতে কোচবিহারে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়েছে বলে ভেবেছিলাম।” তৃণমূলের দিনহাটা টাউন ব্লক সভাপতি বিশু ধরের মন্তব্য, ‘‘পুলিশ কি তা হলে এখন বিজেপির কথাতেই চলছে?’’

অভিযোগ, রবিবার বিকেলে দিনহাটার আমবাড়িতে এক বিজেপি নেতার বাড়িতে হামলা করে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। পুলিশ বাধা দিলে তাদেরও হেনস্থা করা হয়। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ পুলিশ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে মামলা রুজু করে রাতে অভিযান শুরু করে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, “যারা ঝামেলায় জড়িত ছিল, তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।” ধৃতদের এ দিন দিনহাটা আদালতে তোলা হলে ১২ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

উদয়ন বলেন, “মিথ্যে মামলায় কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বিজেপি আমাদের কর্মীদের মারধর করল। কাউকে গ্রেফতার করা হল না। অথচ, আমাদের কর্মীরা গ্রেফতার হল। প্রয়োজনে, পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলব।” গ্রেফতারের তালিকায় রয়েছেন পুলক বসু, মনোজ দে, রানা নিয়োগীর মতো তৃণমূল কর্মীরা নেতা-কর্মীরা, যাঁদের সব সময়ই উদয়নের আশেপাশে দেখা যায়। তৃণমূলের দিনহাটা টাউন ব্লক সভাপতি বিশু ধর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “কর্মীদের শুধু গ্রেফতার নয়, তাঁদের পরিবারের সদস্যদের হেনস্থা করা হয়। এ ক্ষেত্রে আন্দোলন ছাড়া, রাস্তা নেই।”

বিজেপি অবশ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, “পুলিশের উপরে আক্রমণ হয়েছে বলেই তৃণমূল কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বিজেপি কর্মীর বাড়িতে হামলার জন্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”

দিনহাটায় সন্ত্রাসের ঘটনা নতুন কিছু না। বিধানসভা ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগে দিনহাটায় ঘুরে গিয়েছেন জাতীয় মানবধিকার কমিশনের সদস্যেরা। বার বার অভিযোগ উঠেছে, রাজ্য পুলিশ শাসক দলের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয় না। এ বার কিছু দিন ধরে নতুন করে তেতে উঠতে শুরু করেছে দিনহাটা। শনিবার সন্ধ্যায় অভিযোগ ওঠে, তিন জন তৃণমূল কর্মীকে মারধর করে বিজেপি। বিজেপি দাবি করে, আমবাড়িতে তাদের মণ্ডল সভাপতি বিদ্যুৎকমল সরকারের বাড়িতে হামলা চালান তৃণমূল সমর্থকেরা। রবিবার আবার সেই আমবাড়িতেই মহামিছিল করে তৃণমূল। সেখান থেকে ফের বিদ্যুতের বাড়িতে হামলা হয় বলে অভিযোগ। সোমবার ওই বিজেপি নেতার বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক ও বিজেপি বিধায়কদের একটি দল। নিশীথ বলেন, “পুলিশ-প্রশাসন এই বিষয়ে কড়া ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করছি। রাজ্যের শাসক দলেরও মানবিক হওয়া প্রয়োজন।” বিজেপি বিধায়কদের দলটি পরে দিনহাটা থানায় গিয়েও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Udayan Guha TMC Cooch Behar Dinhata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE