মাসুদা খাতুন— নিজস্ব চিত্র।
কুড়িয়ে পাওয়া দেড় ভরির সোনার অলঙ্কার ফিরিয়ে দিলেন বধূ। মালদহের চাঁচলের আদর্শপল্লির ঘটনা। মেয়ের বিয়ের দিন অসতর্কতায় ওই অলঙ্কার হারিয়ে ফেলেছিলেন প্রতিবেশী এক মহিলা। সোমবার ওই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এ দিন ওই বধূর সততা দেখে আপ্লুত গোটা আদর্শপল্লি।
যাকে নিয়ে আপ্লুত সেই মাসুদা খাতুন বলছেন, ‘‘অলঙ্কার পাওয়ার পর থেকে ভাল ভাবে খেতে-ঘুমোতে পারছিলাম না। ভেবেছিলাম থানায় গিয়ে জানাব। কিন্তু তার আগেই ওটা ফিরিয়ে দিতে পেরে ভালো লাগছে।’’
মাসুদার স্বামী ইমরান সরকার ওরফে ছোটনের চাঁচল হাটের পাশে আদর্শপল্লিতে পানের দোকান রয়েছে। ওই পাড়াতেই অন্য প্রান্তে বাড়ি ভূমি সংস্কার দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী তফোজ্জল হোসেনের। গত শনিবার ছিল তাঁর মেয়ের বিয়ে। বিয়ে মিটতেই তার স্ত্রী বেগম হোসেন দেখেন যে তাঁর গলার অলঙ্কার হারিয়ে গিয়েছে। ওই রাতেই তফোজ্জল হোসেনের বাড়ির অদূরে গলির মধ্যে ইটের খাঁজে ওই অলঙ্কার পড়ে থাকতে দেখেন মাসুদা। কিন্তু বাড়িতে স্বামী ছোটন তা দেখে এক অলঙ্কার ব্যবসায়ীর কাছে নিয়ে যান। তিনি তা সোনার বলে জানিয়ে দিতেই মাথায় বাজ পড়ে ওই দম্পতির। কয়েকজনকে ঘটনার কথা বলেওছিলেন। কিন্তু হদিস মেলেনি।
সোমবার বিকেলে ছোটনের পানের দোকানে পান খেতে গিয়েছিলেন তফোজ্জলের এক আত্মীয়। তিনি কথায় কথায় বাড়িতে সবাই মুষড়ে পড়েছেন জানিয়ে ওই অলঙ্কার খোওয়া যাওয়ার কথা জানাতেই লাফিয়ে ওঠেন বছর ত্রিশেকের ছোটন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে তার স্ত্রী যে অলঙ্কার পেয়েছেন সে কথা জানিয়ে তা দেখতে বলেন।
এরপর নিমেষেই অলঙ্কার ফেরত দেওয়ার ঘটনা জানাজানি হতেই মাসুদার বাড়িতে গিয়ে বাসিন্দাদের শুভেচ্ছার ঢল নামে। তফোজ্জল সাহেব মিষ্টি খাওয়ার জন্য এক হাজার টাকা গুঁজে দেন মাসুদার হাতে। কিন্তু তিনি তা ফিরিয়ে দেন। তফোজ্জল এ দিন বলেন, ‘‘স্ত্রীকে এই বলে সান্ত্বনা দিয়েছিলাম যে বাড়িতে কোথাও থাকলে অলঙ্কার ফেরত পাবে। কিন্তু রাস্তাঘাটে পড়লে তা ফেরত পাওয়া কখনওই সম্ভব নয়। কিন্তু আমার ধারণা ভুল ছিল। এখনও মাসুদা-ছোটনের মতো মানুষ আছেন ভেবে ভালো লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy