কেউ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি। কেউ বা নার্সিংহোমে। কেউ আবার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার পর মালদহ মেডিক্যাল বা নার্সিংহোমে চিকিত্সা করিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। এমন আক্রান্ত কোনও কোনও পরিবারে দুই থেকে তিনজন করেও রয়েছেন। ঘরে ঘরে জ্বর তো রয়েছেই। এই চিত্র এখন পুরাতন মালদহ পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের খইহাট্টা এলাকায়।
শনিবার সকালেও এই এলাকার প্রিয়াঙ্কা ঘোষ নামে কুড়ি বছরের এক যুবতীকে ডেঙ্গি আক্রান্ত সন্দেহে মালদহের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলার কালিয়াচক ১ ব্লক ও ইংরেজবাজার পুরসভার পর ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি পুরাতন মালদহ পুরসভাতেই। পুরসভার সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে শহরে এ পর্যন্ত ২৮৪ জনের জ্বর হয়েছে। এর মধ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ৪৭ জন। মৃত্যুর কোনও খবর নেই। যদিও বেসরকারি মতে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি।
শহরের প্রাণকেন্দ্র মঙ্গলবাড়ি মোড় থেকে রেলগেটের দিকে যেতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ডান দিকে খইহাট্টা এলাকা কার্যত ঘিঞ্জি। বসতিও প্রচুর। এলাকার বাসিন্দা গদাধর সরকারের ১২ বছরের ছেলে দেব সরকার তিনদিন ধরে মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি। এ দিন সকালে স্থানীয় রেশন ডিলার আশুতোষ ঘোষের মেয়ে প্রিয়াঙ্কাকে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত সন্দেহে ইংরেজবাজার শহরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। গৌরব ঘোষ নামেও এক যুবক ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। এলাকার বাসিন্দা সুনীল হালদার, অহল্যা হালদার, পরিতোষ ঘোষেরা বলেন, ‘‘আবর্জনা ও নিকাশি নালা নিয়মিত সাফাই যেমন হয়না, তেমনই মশা মারতে কামান দাগা বা স্প্রে-ও নিয়মিত হয় না। শুধু ব্লিচিং ছড়িয়ে দায় সারে পুরসভা। আমরা আতঙ্কিত।’’ এলাকার বাসিন্দা বীরেন রায় জানান, তাঁর স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে তিন জনই সপ্তাহখানেক আগে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মালদহ মেডিক্যালে শয্যা না মেলায় বাধ্য হয়েই নার্সিংহোমে ভর্তি করতে হয়েছিল তিনজনকে।
এই শহরে শুধু খইহাট্টাই নয়, এই ওয়ার্ডেরই কর্মকারপাড়া, গান্ধী কলোনি থেকে শুরু করে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের স্কুলপাড়া, রবীন্দ্রপল্লি, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের খয়রাতি পাড়া, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষপাড়া, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের দেবীপুর ও কোর্ট স্টেশন, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জাপুর এলাকাগুলিতে কার্যত ঘরে ঘরে জ্বর।
পুরাতন মালদহ পুরসভার পুরপ্রধান কার্তিক ঘোষ বলেন, ‘‘সমীক্ষা-সচেতনতার সঙ্গে কামান দাগা, তেল স্প্রে নিয়মিত চলছে। পুরসভার চিকিত্সকররাও যাচ্ছেন। আমরা চেষ্টা করছি।’’