Advertisement
E-Paper

সান্দাকফুর রাস্তা সাফাই ন্যাফের

কোথাও পাহাড়ি ঝোরার গতি বন্ধ করে দিয়েছে চিপস-গুটকার স্তূপ। পাশেই ডাঁই হয়ে রয়েছে প্লাস্টিকের রাশি রাশি বোতল।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৬ ০২:১৯
আবর্জনা জড়ো করে পুড়িয়ে দিচ্ছেন ন্যাফের সদস্যরা। —নিজস্ব চিত্র।

আবর্জনা জড়ো করে পুড়িয়ে দিচ্ছেন ন্যাফের সদস্যরা। —নিজস্ব চিত্র।

কোথাও পাহাড়ি ঝোরার গতি বন্ধ করে দিয়েছে চিপস-গুটকার স্তূপ। পাশেই ডাঁই হয়ে রয়েছে প্লাস্টিকের রাশি রাশি বোতল। সান্দাকফু-সাফাই অভিযানে গিয়ে এমনই নানা ছবি দেখে চমকে গিয়েছেন একদল পরিবেশপ্রেমী। যাঁরা টানা ৫ দিন ধরে মানেভঞ্জন থেকে সান্দাকফুর পথে হেঁটে আবর্জনা কুড়িয়েছেন। তা কোথাও মাটির নীচে পুঁতে দিয়েছেন। আবার কোথাও পুড়িয়ে দিয়েছেন। সব মিলিয়ে বিশাল মাপের ২০ বস্তা প্লাস্টিকের নানা উপকরণ পথের ধার থেকে কুড়িয়ে নষ্ট করেছেন ওঁরা। মানে হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের (ন্যাফ) সদস্যরা।

তবে যতটা সাফাই করেছেন, তাতে কিছুটা স্বস্তি পেলেও যাতায়াতের রাস্তার ধারের বেশ কিছু ছবি ন্যাফের সদস্য-সদস্যাদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। সে জন্য ন্যাফের পক্ষ থেকে বছরে অন্তত দু’বার সান্দাকফুর ট্রেক-রুটে সাফাই অভিযানের কথা ভাবা হচ্ছে। ন্যাফের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘আমরা তো ৮ বছর ধরেই ‘ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন সিঙ্গালিলা’ শীর্ষক সাফাই অভিযান করছি। এ বারের অভিজ্ঞতার ভাল দিক হল, আগের তুলনায় সান্দাকফুর পথে তুলনায় কম আবর্জনা দেখা গিয়েছে। কিন্তু, রাস্তা থেকে নীচের খাদের দিকে তাকিয়ে অনেক জায়গায় প্লাস্টিক-সামগ্রীর স্তূপ দেখা গিয়েছে। বেশ কয়েকটি ঝোরার গতিপথ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে জন্য সরকারি-বেসরকারি, উভয় স্তর থেকে একযোগে কাজে নামতে হবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে পদক্ষেপ করব।’’

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১,৯২৯ ফুট উঁচুতে অবস্থিত সান্দাকফুতে রাজ্য বন দফতরের সিঙ্গালিলার সংরক্ষিত অরণ্যের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। ইদানীং ওই পাথুরে পথে অতিরিক্ত ল্যান্ডরোভার যাতায়াত করছে। ‘ট্রেক’ করতেই উপচে পড়ছে ভিড়। ফলে, যাতায়াতের সময়ে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের বোতল, পাউচ, চিপস জাতীয় খাবারের প্যাকেট, গুটকার মোড়ক ফেলছেন অনেকেই। ফি বছর ন্যাফের সদস্যরা বন দফতরের দার্জিলিং বন্যপ্রাণ বিভাগের সহযোগিতায় সাফাই অভিযানে নামেন। সংস্থার তরফে কিছুটা আর্থিক সহায়তা করা হলেও সদস্য-সদস্যাদের অনেকে নিজেরাই বাকি টাকা জোগাড় করেন। তার পরেই ঝোলা কাঁধে বেরিয়ে পড়েন সান্দাকফু-সাফাইয়ের কাজে।

চলতি বছরে ১৮ অক্টোবর ন্যাফের প্রবীণ সদস্য অরুণ দত্ত, জীবনকৃষ্ণ রায়ের নেতৃত্বে ১৭ জন সান্দাকফুর উদ্দেশে রওনা হন। তাতে সামিল হন কলেজ পড়ুয়া লিস রায় সহ ৪ জন তরুণীও। যাতায়াতের পথে চিত্রে, লামেধুরা, মেঘমার মতো সব কটি লোকালয়ের বাসিন্দারাও ওই উদ্যোগে সামিল হন। ওই পথে যাতায়াতকারী পর্যটকদেরও ন্যাফের তরফে পাহাড়ি জঙ্গলের পথে কোনও প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য না ফেলার জন্য অনুরোধ করা হয়। তাতে কিছুটা কাজ হলেও পুরোপুরি যে হয় না সেটা অবশ্য ৫ দিন ধরে বস্তা-বস্তা জঞ্জাল সংগ্রহের পরে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে তাঁদের কাছে। ওই অভিযানের নেতৃত্বে থাকা অরুণবাবু বলেন, ‘‘বেশ কয়েকটি জায়গায় আমরা খাদের দিকে তাকিয়ে দেখেছি প্রচুর প্লাস্টিক বর্জ্য জমে রয়েছে। কোথাও ঝোরার পথ আটকে য়াচ্ছে। যা সরাতে দড়ি বেয়ে ওঠানামা করতে হবে। তা অনেক সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ। তা নিয়ে সকল পরিবেশপ্রেমীকেই ভাবতে হবে।’’

Sandakphu
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy