Advertisement
E-Paper

আট বাগান বেছে খোলার উদ্যোগ

প্রথম পর্যায়ে বন্ধ এবং রুগ্‌ণ আটটি চা বাগান বেছে খোলার প্রক্রিয়া শুরু করবে চা ডিরেক্টরেট। শুক্রবার ডিরেক্টরেটের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৬ ০১:৫৩
উত্তরকন্যায় টি-ডিরেক্টরেটের বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।

উত্তরকন্যায় টি-ডিরেক্টরেটের বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।

প্রথম পর্যায়ে বন্ধ এবং রুগ্‌ণ আটটি চা বাগান বেছে খোলার প্রক্রিয়া শুরু করবে চা ডিরেক্টরেট। শুক্রবার ডিরেক্টরেটের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোন আটটি চা বাগান দিয়ে প্রক্রিয়া শুরু হবে তাও সমীক্ষা করে চিহ্নিত করা হবে। পরবর্তী পর্যায়ে বাকি বাগানগুলি খোলার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ডিরেক্টরেটের তরফে দাবি করা হয়েছে, একসঙ্গে সবকটি বাগান নিয়ে আলোচনা শুরু করলে দ্রুত পদক্ষেপ সম্ভব নয়। সে কারণেই ‘কেস টু কেস’ পদ্ধতি অনুসরণ করে পৃথক ভাবে বাগান ধরে আলোচনা চাইছে ডিরেক্টরেট। ডিরেক্টরেটের চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বন্ধ এবং রুগ‌্‌ণ চা বাগানের শ্রমিকরা অভাব-অনটন দূর করতে নানা পদক্ষেপের সঙ্গেই বাগান খোলারও চেষ্টা করা হবে। প্রথমে আটটি বাগান নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। বাস্তব পরিস্থিতি মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত।’’

উত্তরবঙ্গে তরাই-ডুয়ার্স মিলিয়ে বন্ধ এবং রুগ্‌ণ চা বাগানের সংখ্যা ২২। বেশ কয়েক দফায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পরেও বাগানগুলি নিয়ে কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। কিছু বাগান নিয়ে হাইকোর্টে মামলাও চলছে। তার জেরে বাগানগুলিতে অচলাবস্থা বহাল আছে। যে বাগানগুলিতে মামলা সংক্রান্ত জটিলতা নেই সেখানে শ্রমিক এবং মালিকপক্ষের সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা শুরু করবে ডিরেক্টরেট। অন্যদিকে, যে বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রাজ্য বা অন্য কোনও সরকারি সংস্থার মামলা চলছে, সেগুলির জটিলতা কাটাতে হাইকোর্টের অভিজ্ঞ আইনজীবীদের নিয়ে কমিটি গড়ে নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। তার সঙ্গে কেন্দ্রীয় চা পর্ষদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখার কাজ করবে ডিরেক্টরেট।

কী পদক্ষেপ

১: প্রতি বাগান ধরে ‘কেস টু কেস’ আলোচনা

২: ঋণ কমাতে কেন্দ্র ও রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা

৩: সম্ভব হলে বকেয়া মেটানোর জন্য বিশেষ বরাদ্দ

৪: কোনও চা বাগান মালিকসংস্থাকে রাজি করানো

৫: মামলার জটিলতা কাটাতে আইনজীবীদের নিয়ে কমিটি

৬: আগ্রহী সংস্থাকে অব্যবহৃত জমিতে বিকল্প চাষের ছাড়পত্র

এই উদ্যোগে বন্ধ-রুগ্‌ণ চা বাগান খোলার প্রক্রিয়ায় গতি আসবে বলে দাবি করা হয়েছে। কেননা, চা বাগান নিয়ে আলোচনার প্রক্রিয়ায় এতদিন বারবার সরকারের বিভিন্ন দফতরের মধ্যেই সমন্বয়ের অভাবের অভিযোগ উঠেছে। কারণ সমস্যা সমাধানে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকে শ্রম দফতর। যদিও, শিল্প এবং অর্থ দফতরের সম্মতি ছাড়া শ্রম দফতরের যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার নেই। বিভিন্ন দফতরের মধ্যে চিঠি-ফাইল চালাচালিতেই অনেক সময় লেগে যেত। তাছাড়া, কেন্দ্রীয় সংস্থা চা পর্ষদের সঙ্গে কোনও দফতর সরাসরি যোগাযোগ করবে তা নিয়ে টানাপড়েন লেগেই থাকত। এ বার থেকে রাজ্যের সদ্য গঠন করা চা ডিরেক্টরেট বন্ধ ও রুগ্ণ বাগান খুলতে উদ্যোগী হওয়ায় সমন্বয়ের কোনও সমস্যা থাকবে না বলে দাবি করা হয়েছে। ডিরেক্টরেটই শ্রম, অর্থ ও শিল্প দফতরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করবে। বিভিন্ন দফতরের যোগাযোগ রাখার জন্য ডিরেক্টরেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক থাকবেন। রাজ্যের নির্দেশে চা পর্ষদের সঙ্গেও আলোচনা চালাবে ডিরেক্টরেট। এর ফলে বাগান খোলার প্রক্রিয়ায় গতি আসবে বলেও দাবি করা হয়েছে।

যদিও ডিরেক্টরেটের উদ্যোগ কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন চা শ্রমিক সংগঠন। চা ডাইরেক্টরেটের হাতে পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা না দিয়ে শুধুমাত্র আলোচনা চালানোর ভার দিলে ফল মিলবে কি না তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে তারা। শ্রমিক সংগঠন এনইউপিডব্লুর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনিকুমার ডার্নাল বলেন, ‘‘যে প্রক্রিয়ার কথা বলছে তা এতদিন ছিল। ডিরেক্টরেটকে সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা না দিলে, আলোচনায় শুধুমাত্র আরেকটি সংস্থার সংখ্যা বাড়বে, আর কিছু হবে না।’’

আগামী সপ্তাহের মধ্যেই শিলিগুড়ির বিবেকানন্দ ভবনে স্থায়ী অফিস পেতে চলেছে সদ্য গঠিত চা ডিরেক্টরেট। তার পরেই এ দিনের ঘোষণা করা পদক্ষেপের প্রক্রিয়া শুরু হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের অধীনে থেকেই ডিরেক্টরেট কাজ করবে বলে রাজ্যের প্রকাশ করা বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল। এ দিনের বৈঠকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, ডিরেক্টরেটের চেয়ারম্যান সৌরভবাবু-সহ অন্য সদস্যরা ছিলেন। বাগান খোলার প্রক্রিয়ার সঙ্গে চা শ্রমিকদের রেশন, আবাসন নানা সুযোগ সুবিধের তদারকিও চালিয়ে যাওয়া হবে বলে এ দিন দাবি।

Tea garden
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy