Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শিলিগুড়িতে নতুন আনন্দ

উত্তরের বইচর্চায় নতুন মাত্রা যোগ করে সোমবার শিলিগুড়িতে উদ্বোধন হল আনন্দ বিপণির। দিগন্তে পাহাড়, শহর ছাড়ালেই জঙ্গল। খোলা প্রকৃতির মধ্যে বড় হয়ে উঠেছে বলে শহরের হৃদয়ে সাহিত্য-সংস্কৃতির আলাদা স্থান

বিপণি খুলতেই জমল ভিড়। — নিজস্ব চিত্র

বিপণি খুলতেই জমল ভিড়। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৬ ০৮:২৬
Share: Save:

উত্তরের বইচর্চায় নতুন মাত্রা যোগ করে সোমবার শিলিগুড়িতে উদ্বোধন হল আনন্দ বিপণির।

দিগন্তে পাহাড়, শহর ছাড়ালেই জঙ্গল। খোলা প্রকৃতির মধ্যে বড় হয়ে উঠেছে বলে শহরের হৃদয়ে সাহিত্য-সংস্কৃতির আলাদা স্থান। অশ্রুকুমার সিকদারের মতো চিন্তাবিদ থেকে গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্যের মতো সাহিত্যিক— অনেকেই শিলিগুড়ির ভূমিপুত্র। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা সকলেই চাইছিলেন, বইচর্চার পরিধি আরও বিস্তৃত হোক। এর আগে শিলিগুড়িতে আনন্দ বিপণি খোলাও হয়েছিল। কিন্তু পরে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এ দিন নতুন করে আনন্দ বিপণি উদ্বোধন হওয়ার পরে বইচর্চা আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করছেন বিপণিতে হাজির অনেকে।

গৌরীবাবু যেমন বলছিলেন, ‘‘আমরা খুশি তো বটেই। আগের আনন্দ বিপণিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে আমাদের কিছুটা তো সমস্যা হচ্ছিলই। এ বার সেই সমস্যা মিটল।’’ এই বিপণিতে আনন্দ-র সঙ্গে মিলবে সিগনেট প্রেসের সব বইও। বই কিনলে ছাড়ের ব্যবস্থাও রেখেছেন কর্তৃপক্ষ।

শিলিগুড়ির আশুতোষ মুখার্জি রোডে বান্ধব সঙ্ঘের কাছে খুলেছে এই নতুন বিপণি। এ দিন বিপণিটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন আনন্দ-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুবীর মিত্র। তিনি জানান, জায়গাটি খুবই সম্ভাবনাময়। বিপণির উদ্বোধন করেন শিলিগুড়ি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন প্রধান সঞ্জীবন দত্তরায়। প্রথম দিনেই ভাল বিক্রিবাটা হয়েছে বলে বিপণি সূত্রে জানা গিয়েছে। বিপণিটির দায়িত্বে রয়েছেন অসীম রায়। তিনি জানান, বহু মানুষ এসেছেন দোকানে। বইও কিনেছেন অনেকে।

প্রথম দিনের আগ্রহী মুখের মধ্যে ছিলেন সাহিত্যিক সেবন্তী ঘোষ। ছিলেন কলেজ পড়ুয়া সঞ্জয় দাস। এঁদের সকলের একটাই কথা, আনন্দের বইয়ের তো আলাদা আকর্ষণ। সেই টানেই এসেছেন তাঁরা। আবারও আসবেন। কৃতিতা দাস সদ্য কলেজ শেষ করে চাকরিতে ঢুকেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতায় যে বইমেলা হয়, ধারে ও ভারে তা ছোট শহরের বইমেলার থেকে অনেক বেশি। শুধু ওই মেলাই নয়, সেখানে মাঝেমধ্যেই বইবাজারের মতো মেলার আয়োজন করা হয়। তা ছাড়া এলাকায় এলাকায় তো আনন্দ বিপণি রয়েইছে। এত দিন শিলিগুড়িতে সেই খামতিটা ছিল। এ বার বিপণি খোলার পরে চাহিদা মতো মনের খোরাক মিলবে আমাদের।’’

শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের পদ্যসমগ্র থেকে সমরেশ বসু রচনাবলী, ফেলুদা সমগ্র থেকে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের অদ্ভুতুড়ে সিরিজের বই, সটিক হুতোম প্যাঁচের নকশা থেকে সুভাষচন্দ্র বসু রচনাবলী— কী নেই তাকে তাকে! পাশাপাশি রয়েছে সিগনেটের পুরনো বইয়ের পুনর্মুদ্রণ এবং নতুন প্রকাশিত বইও। ইচ্ছেমতো নেড়েচেড়ে দেখার সুযোগ। ছোটরা হামলে পড়ছে আনন্দ-র কিশোর সমগ্রগুলির উপরে।

কলেজ পড়ুয়াদের অনেকেই ঘুরছেন কবিতার বইয়ের কাছে। উপন্যাস থেকে প্রবন্ধ— বয়স্কদের বিচরণ সর্বত্র। বই হাতে হিসেব মিলিয়ে অনেকেই দাঁড়িয়ে পড়ছেন কাউন্টারে। তার পর ছাড়ের টাকা মিলিয়ে খুঁজে নিচ্ছেন আরও বই।

সব মিলিয়ে প্রথম দিনেই সরগরম আনন্দ বিপণি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ananda Publishers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE