Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নাবালিকা বিয়ে রুখতে পাশে ইমাম-পুরোহিত

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়। কী ভাবে ওই প্রকল্পের সুবিধে মিলতে পারে, কারা প্রকল্পের আওতায় আসার সুযোগ পাবেন, তা বুঝিয়ে বলেন প্রশাসনের কর্তারা।

বৈঠক: ইমাম-পুরোহিতদের নিয়ে প্রশাসনিক আলোচনা। নিজস্ব চিত্র

বৈঠক: ইমাম-পুরোহিতদের নিয়ে প্রশাসনিক আলোচনা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৮ ০১:৫০
Share: Save:

চার হাত এক করতে যাঁরা ভরসা, নাবালিকা বিয়ে বন্ধে তাঁদেরই পাশে চাইল প্রশাসন। শনিবার সেই আস্থা স্পষ্ট হয়েছে ইমাম, পুরোহিত, ম্যারেজ রেজিস্ট্রারদের নিয়ে ডাকা প্রশাসনের বৈঠকে। বুধবার বিকেলে কোচবিহারের ল্যান্সডাউন হলে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত বৈঠকে বিভিন্ন স্তরের দেড় শতাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। যাঁদের সকলেই কোনও না কোনও ভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকেন।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়। কী ভাবে ওই প্রকল্পের সুবিধে মিলতে পারে, কারা প্রকল্পের আওতায় আসার সুযোগ পাবেন, তা বুঝিয়ে বলেন প্রশাসনের কর্তারা। রূপশ্রী প্রকল্পের সুবিধে পেতে কেমন ফর্মে আবেদন জানাতে হবে তা দেখানো হয়।

সভায় যোগদানকারী কয়েক জন জানান, নাবালিকা বিয়ের প্রবণতা আগের তুলনায় অনেকটা কমেছে। পুরোপুরি ওই প্রবণতা বন্ধে কিছুটা সময় লাগবে। একজোট হয়ে সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “সকলের সহযোগিতায় নাবালিকা বিয়ে পুরোপুরি বন্ধ হবে।”

বাল্য বিবাহ আইনের ব্যাপারেও আলোচনা হয়। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, কেউ নাবালিকা বিয়ে দেওয়ায় যুক্ত, তা প্রমাণ হলে আইনি ব্যবস্থার মুখে পড়তে পারেন। জেল হাজতও হতে পারে। কন্যাশ্রী প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোচবিহার জেলা আধিকারিক তমোজিৎ চক্রবর্তী জানান, গত ছ’মাসে জেলার বিভিন্ন স্কুলে ৩৭ জন নাবালিকার বিয়ে আটকেছে তাদের সহপাঠী কন্যাশ্রী ক্লাবের মেয়েরাই। সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে ও রকম বিয়ের আয়োজনের পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সে চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক কর্তার অভিযোগ, নজর এড়িয়ে তার পরেও নাবালিকা বিয়ে হচ্ছে।

আশ্বস্ত করছেন পুরোহিত, ইমাম, ম্যারেজ রেজিস্ট্রার, ম্যারেজ অফিসাররা অনেকেই। ইমাম সোবান আলি বলেন, “কন্যাশ্রী-তে অনেকেই উপকৃত হয়েছে। রূপশ্রীও ভাল প্রকল্প। তা ছাড়া আগের চেয়ে নাবালিকা বিয়ের প্রবণতা কমেছে।” ইমাম জাহেরুল ইসলাম বলেন, “প্রশাসন ভাল উদ্যোগ নিয়েছে।” এক ম্যারেজ রেজিস্ট্রার ওয়াজেদ খন্দকার বলেন, “সরকারি নির্দেশ মেনেই কাজ করতে হবে।”

পুরোহিত বিমল চক্রবর্তী, মনোরঞ্জন চক্রবর্তীরা বলেন, “এখন আমরা বয়সের প্রমাণ দেখে নিচ্ছি। খানিকটা সময় লাগলেও নাবালিকা বিয়ের প্রবণতা এক দিন পুরো বন্ধ হবেই।” রূপশ্রী-কন্যাশ্রী ওই আশা বাড়িয়েছে বলেই মত তাঁদেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Girl Child Marriage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE