Advertisement
৩০ মার্চ ২০২৩

মাসিক নিয়ে কথা বলবে নির্মল বাংলা

বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এই জেলার বহু গ্রামেই মহিলারা ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সচেতন নন। অনেকেই স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবহার জানেন না। অনেকে আবার দোকান থেকে স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতেও লজ্জা পান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৭ ০৯:৩০
Share: Save:

মাসিক শুরু হতেই শুরু হয় স্কুল কামাই। কেউ কেউ অসচেতনতার কারণে অসুস্থও হয়ে পড়ে। দেশের মফস্সল শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামের ছবিটা এখনও পর্যন্ত এই রকমই। মাসিক নিয়ে খোলামেলা কথা বলা তো দূর অস্ত্, কুসংস্কার আর রাখ-ঢাকে জড়িয়ে রয়েছে ‘ওই ক’টা দিনে’ মেয়েদের চলাফেরা, আচার, আচরণ। কোচবিহারের মতো জেলায় এই অবস্থার অবসান ঘটাতে এ বারে আসরে নামল নির্মল বাংলা টিম। সোমবার কোচবিহার জেলা পরিষদের হলঘরে এই নিয়ে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নির্মল বাংলা দলের কর্মীরা ছাড়াও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

কলকাতা বা দিল্লির মতো রাজধানীতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা মাসিক নিয়ে সচেতনতার পক্ষে বা সংস্কারের বিরোধিতা নিয়ে সওয়াল করলেও জেলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলো এখনও সেই তিমিরেই রয়েছে। জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “এই সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। ইতিমধ্যেই কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। অভিযান খুব শীঘ্র শুরু করা হবে।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়াও উপস্থিত ছিলেন। জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ শুচিস্মিতা দেবশর্মা বলেন, “ঋতু চলাকালীন কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয় সে ব্যাপারে সবার জানা প্রয়োজন। এ ছাড়া স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়াও একটা বড় ব্যাপার। এ সবই তুলে ধরা হবে প্রচারে।”

বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এই জেলার বহু গ্রামেই মহিলারা ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সচেতন নন। অনেকেই স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবহার জানেন না। অনেকে আবার দোকান থেকে স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতেও লজ্জা পান। অতঃপর ভরসা বাড়ির পুরনো কাপড় বারবার কেচে-ধুয়ে ব্যবহার করা। বেশ কিছু এলাকায় এখনও প্রচলিত মাসিকের আনুষঙ্গিক নানা কুসংস্কার।

কলকাতা বা দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলার স্কুল-কলেজে স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। কিন্তু সে সংখ্যাও হাতে গোনা। কোচবিহারে তেমন ব্যবস্থাও নেই। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “প্রথমে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি। ধীরে ধীরে অন্য দিকগুলো নিয়ে এগোতে চাই।” স্কুলে আলোচনা শিবিরের পাশাপাশি বিভিন্ন আকর্ষণীয় খেলার মাধ্যমে বিষয়টিকে মনোগ্রাহী করে তোলা হবে। ছাত্রীদের অভিভাবকদের নিয়েও নিয়মিত আলোচনা সভা আয়োজন করা হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকবেন আলোচনায়। এ ছাড়াও স্কুল পরিষ্কার, শৌচাগার পরিষ্কার রাখার মতো বিষয় থাকবে। এ নিয়ে আগামী সোমবার জেলা পরিষদে একটি সেমিনার রয়েছে।

Advertisement

কোচবিহার জেলার ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য আধিকারিক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, “শুধু কোচবিহার নয়, সব জায়গাতেই মাসিক নিয়ে মৌন থাকেন সবাই। সবার কাছে পৌঁছে এই শারীরিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে কথা বলতে চাই, যাতে সবার স্বাস্থ্য ভাল থাকে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.