ফাইল চিত্র।
রাজেশ খন্না গান শুরু করেছেন। দার্জিলিঙের পাহাড়ি পথে জিপ ছুটে যাচ্ছে। পাশে পাশে টয়ট্রেন, জানলায় বই হাতে শর্মিলা ঠাকুর। বলিউডের বিজ্ঞাপনে ‘আরাধনা’ ছবির এই দৃশ্য বারবার ফিরে এসেছে। কিন্তু এই দৃশ্যের পিছনে কতটা মেহনত রয়েছে ছবি নির্মাতাদের, কত কাঠখড় পুড়িয়ে কোথা থেকে ট্রেনের অনুমতি জোগাড় করা হয়েছে, তা নিয়ে কেউ মাথা ঘামাননি। এত বছর ধরে টয় ট্রেন ভাড়া করতে অসমের মালিগাঁওয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের সদর দফতরে সশরীর যেতে হত। এ বারে থেকে সব ঝক্কি শেষ। বুকিং বা আবেদন করা যাবে অনলাইনে। সেই ভাবে টাকাও জমা দেওয়া যাবে। সম্প্রতি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলবোর্ড।
এত দিন শুধু টাকা নয়, মুম্বই বা কলকাতা থেকে মালিগাঁও সদর দফতরে লোক পাঠিয়ে, শ্যুটিংয়ের নথিপত্র দেখিয়ে আবেদন করে টাকা জমা দিতে হত। এর জন্য যাতায়াত করতে হত ৩-৪ বার। বারবারই তার সরলীকরণের দাবি উঠছিল। করোনাকালে টয়ট্রেন থেকে আয় বাড়াতেও চায় রেল। তাই এই সিদ্ধান্ত। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘টয়ট্রেনের বুকিং নিয়ে কিছু সমস্যার কথা উঠে এসেছিল। অনলাইনের মাধ্যমে তা সরলীকরণ করা হল। এ বার থেকে ট্রেনটি শ্যুটিংয়ে ভাড়া করার জন্য আবেদন করে তা পরপর ট্র্যাক করার বন্দোবস্তও থাকছে অনলাইনে।’’
রেল সূত্রের খবর, এখন টয়ট্রেন একদিন বুক করতে ২ লক্ষ ২১ হাজার টাকার মতো লাগে। এর মধ্যে দেড় লক্ষ টাকা সিকিউরিটি ডিপোজিট, যা পরে ফেরত দেওয়া হয়। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এত দিন ডিমান্ড ড্রাফ্ট নিয়ে কাউকে অসমে গিয়ে আবেদন করা টাকা জমা করতে হত। তার পরে জমা দিতে হত প্রয়োজনীয় নথি। শেষে আর্জি গৃহীত হলে ছাড়পত্র আনতে ফের অসম যেতে হত। সম্প্রতি বাংলায় শ্যুটিং করার জন্য বিধি মেনে ছাড়পত্র দেওয়া শুরু হয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে রেলের কাছে টয়ট্রেন নিয়ে পরিচালক, প্রযোজক সংস্থার তরফে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। সিনেমা, ওয়েব সিরিজের কাজে টয়ট্রেনকে ব্যবহার করতে চাইছেন অনেকে।
মার্চ মাসে হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের তরফে রেলের চিফ হেরিটেজ অফিসারের কাছে টয়ট্রেনের বুকিং সরল করা এবং এনজেপিকেন্দ্রিক ছাড়পত্র, টাকা জমার ব্যবস্থা করতে আবেদন করা হয়। সম্প্রতি একাধিক পরিদর্শন, বৈঠকের অনলাইনে টয়ট্রেন ভাড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পর্যটন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘রেলের নতুন ব্যবস্থায় টয়ট্রেনকে ঘিরে বাণিজ্য শুধু নয়, পর্যটনেরও বিকাশ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy