মালদহে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তদন্তে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। নিজস্ব চিত্র
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী চরি অনন্তপুর পঞ্চায়েতের আম বাগান ঘেরা কামারপাড়া গ্রাম। শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ পুলিশ, জেলা প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে গ্রামে হাজির প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের তদন্তকারী কেন্দ্রীয় দল। গ্রামের রাস্তার পাশের ইটের গাঁথনির উপরে টালির ছাউনি দেওয়া ঘরে ঢুকে পড়েন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। তাঁদের দেখে ঘর থেকে বেরিয়ে কখনও আধার কার্ড, কখনও আবার প্যান কার্ড বার করে নিয়ে আসেন আবাস যোজনায় নাম থাকা লোহার সরঞ্জাম বিক্রেতা ধনপতি পাণ্ডে। তাঁর মাসে আয় কত, তা-ও জানতে চান জেলায় আসা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলের প্রধান শক্তিকান্ত সিংহ। ধনপতি বলেন, ‘‘বৃষ্টি হলে টালি দিয়ে জল পড়ে। তদন্তকারী কেন্দ্রীয় দলকেসব জানিয়েছি।’’
সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ওই গ্রামেরই বাসিন্দা কালিয়াচক থানার সিভিক ভলান্টিয়ার অভিজিৎ পাণ্ডে, তি নতলা বাড়ির মালিক রেশন ডিলার যদুনন্দন দাস, অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী কুলেশ মণ্ডলের দোতলা পাকা বাড়িও ঘুরে দেখেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। প্রশাসনের দাবি, এই বাড়ির মালিকদের নাম সমীক্ষা করে আগেই কেটেদেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় দলকে সে বিষয়েও জানানো হয়েছে। অভিজিৎ বলেন, ‘‘সিভিকের চাকরি করে দশ হাজারেরও কম বেতন মেলে। ইটের ছোট গাঁথনি করে কংক্রিটের টিন দিয়ে কোনও রকমে বাস করছি। তার পরেও নাম ঘরের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’’ ঘরের তালিকায় নাম থাকার বিষয়ে কিছু জানা ছিল না বলে জানান যদুনন্দন।
এর পরে, পুলিশ, প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের বিধানসভা মোথাবাড়ি কেন্দ্রেও যায় কেন্দ্রীয় দল। মোথাবাড়ির বাঙিটোলারফিল্ড পাড়ার দ্বিতল বাড়ির জরিপ শেখ, গোঁসাইহাটের পঞ্চায়েতের অস্থায়ী কর্মী সাদ্দাম হোসেনের বাড়িতেও যান প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। পাকা বাড়ি আছে, এর পরেও টাকা পেলে ঘর কোথায় বানাতেন জরিপকে প্রশ্ন করেন তাঁরা। ঋণ নিয়ে দু’বছর আগে ঘর বানিয়েছেন বলে তদন্তকারী দলকে জানান জরিপ।
সাবিনা বলেন, ‘‘প্রশাসন তদন্ত করে আগেই নাম বাদ দিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের রাজনৈতিক সুবিধে করতে কেন্দ্রীয় দলকে পাঠিয়ে বিজেপি ফায়দা লুটতে চাইছে।’’ উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দলকে দেখে তৃণমূল এত ভয় কেন, বুঝতে পারছি না। তদন্তে অসঙ্গতি আছে দেখেই তৃণমূলের ভয় হচ্ছে।’’
এ দিন মোথাবাড়ির পরে ইংরেজবাজারের অমৃতির কামাত গ্রামেও যায় দল। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ২০০ কিলোমিটার এলাকা ঘুরলেও ১৫টি ব্লকের মধ্যে মাত্র তিনটি ব্লকেই তদন্ত করেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তাঁরা। পরে, মালদহের নিউ সার্কিট হাউজ় প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy