Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

গাফিলতি, তথ্য গোপনে অভিযুক্ত কর্মী

শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে রোগী কালু মাঝির নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ পাওয়ার পর তড়িঘড়ি কমিটি তৈরি করে তদন্ত শুরু করানোর ঘোষণা করা হয়েছিল। রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল ৭ দিনের মধ্যে। কিন্তু ১০ দিন কেটে গেলেও তদন্ত শুরু করতেই পারেননি তাঁরা। কাজের চাপে তদন্ত শুরু করা যায়নি বলে দাবি করেছেন হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৫ ০২:০৬
Share: Save:

শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে রোগী কালু মাঝির নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ পাওয়ার পর তড়িঘড়ি কমিটি তৈরি করে তদন্ত শুরু করানোর ঘোষণা করা হয়েছিল। রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল ৭ দিনের মধ্যে। কিন্তু ১০ দিন কেটে গেলেও তদন্ত শুরু করতেই পারেননি তাঁরা। কাজের চাপে তদন্ত শুরু করা যায়নি বলে দাবি করেছেন হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল।

যদিও এই অজুহাত মানতে নারাজ ওই রোগীর পরিজনেরা। শুক্রবার শিলিগুড়ি থানায় ও পুলিশ কমিশনারের কাছে ওয়ার্ড মাস্টার-সহ হাসপাতালের কর্মী ও নার্সদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতি ও ইচ্ছাকৃত নিখোঁজের বিষয়ে তথ্য গোপনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এমনকী এই সমস্ত অভিভাবকহীন দেহ অন্য কোনও উদ্দেশ্যে ব্যবহার হয় কিনা তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে অভিযোগে। ঘটনা কী হয়েছে তা নিয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ তবে কেন রোগী নিখোঁজের মত গুরুতর বিষয়ে এত দিনেও তদন্ত শুরু করা হল না, সে বিষয়ে হাসপাতালের সুপারের কাছে জানতে চাওয়া হলে বলেন, ‘‘হাসপাতালে বহু আনুষ্ঠানিক কাজকর্ম রয়েছে। তার চাপেই শুরু করা যায়নি। তবে দ্রুত তদন্ত করার নির্দেশ দেব।’’ তিনি যে তদন্ত কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাতে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এ দিন অবশ্য তিনি সাত দিনের সময়সীমা দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘‘সাত দিন নয় পনেরো দিনের মধ্য রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি মানছেন না দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সাত দিনের মধ্যেই রিপোর্টের কথা বলা হয়েছিল। সুপার ঠিক বলছেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ না করাতেই পুলিশের দ্বারস্থ হতে হল।’’ অমিতবাবু শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ জমা দেন। এ দিনই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ করা হয়েছে শিলিগুড়ি থানায়। এই অভিযোগটি দায়ের করেন সূর্যসেন কলোনির বাসিন্দা প্রমল বণিক। তিনি জানান, তাঁরা ওই বৃদ্ধকে রাস্তা থেকে উঠিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করান। তাঁদের ফোন নম্বরও দেওয়া হয়েছিল। অথচ তাঁকে অন্য কোথাও পাঠানো হলে তাঁদের জানানো উচিত ছিল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমাদের না জানিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অন্যায় করেছে। তারপরে তদন্তে গড়িমসি করে আরও বড় অন্যায় করেছেন তাঁরা। আমরা বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ করেছি।’’

লিগাল এইডের সূত্রে দাবি করা হয়েছে, গত ৫ এপ্রিল কালুবাবুকে নর্দমায় পড়ে থাকতে দেখেন সূর্যসেন কলোনি এলাকার বাসিন্দারা। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করার পর দেখা যায়, তাঁর সারা শরীরে জখমের চিহ্ন, বাঁ হাত নাড়াতে পারছেন না। এরপরে তাঁকে স্থানীয়রাই কয়েকজন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন। খবর পেয়ে তাতে সহযোগিতা করেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও। অভিযোগ, গত ১১ এপ্রিল ওই ব্যক্তি হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE