Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

আবার বৃষ্টিতে আতঙ্ক তিস্তাপারে

ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। নদীর জল বৃহস্পতিবার নতুন করে না বাড়লেও পাহাড়ে ফের বৃষ্টি শুরু হওয়ায় রাতে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে তা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন বাসিন্দারা। ইতিমধ্যেই নানা এলাকায় জলমগ্ন হয়ে প্রায় ৪৫ হাজার বাসিন্দা ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে প্রশাসনের আশঙ্কা।

সব্যসাচী ঘোষ
মালবাজার শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৫ ০২:৪৯
Share: Save:

ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। নদীর জল বৃহস্পতিবার নতুন করে না বাড়লেও পাহাড়ে ফের বৃষ্টি শুরু হওয়ায় রাতে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে তা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন বাসিন্দারা। ইতিমধ্যেই নানা এলাকায় জলমগ্ন হয়ে প্রায় ৪৫ হাজার বাসিন্দা ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে প্রশাসনের আশঙ্কা।

তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলার সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মোটামুটি ২৫ কোটি টাকার সম্পত্তি হানি হয়েছে। প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এ সব দেখে অনেকের ১৯৬৮ সালের তিস্তার বন্যার কথা মনে পড়ছে।’’ এদিন, বারোপেটিয়া এবং মান্তাদাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে বিপজ্জনক ভাবে বেড়ে যায় তিস্তায় জল। প্রচন্ড জলস্ফীতি হওয়ায় মঙ্গলবার গভীর রাত থেকেই তিস্তা ব্যারাজের ৩৮টি গেট খুলে দেওয়া হয়। এর জেরে তিস্তার ডানপাড়ে থাকা মান্তাদাড়ি এবং বারোপেটিয়া এলাকা প্লাবিত হয়। বিপন্ন প্রায় দু’ হাজার পরিবার।

বুধবার ভোর থেকেই গ্রামে জল ঢুকতে থাকায় ঘরবাড়ি ছেড়ে উচু জায়গায় উঠে আসেন তাঁরা। কোথাও রাস্তাতেই ত্রিপল টাঙিয়ে আবার কোথাও প্রাথমিক স্কুলগুলোতে আশ্রয় নেন প্রায় হাজার দশেক বাসিন্দা। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বোদাগঞ্জ হয়ে বারোপেটিয়া এবং মান্তাদাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেতর একাধিক রাস্তা জলের তোড়ে উড়ে যাওয়ায় সমস্যা আরও বেড়েছে তাঁদের।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তিস্তার জল খানিকটা নামলেও ফের দুপুর থেকে ডুয়ার্স জুড়ে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ে বাসিন্দাদের। ত্রাণ শিবির গুলোতে ৩ দিনের খাবার মজুত করে ফেলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। টাকিমারি এলাকার বীরেন বস্তির ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া সাবিত্রী মন্ডল, গৌরাঙ্গ সরকাররা এদিন জানান, পুকুরে কুড়ি হাজার টাকারও বেশি মাছ বন্যার জলে বেরিয়ে গিয়েছে। প্রতিটি পুকুরেই তিস্তার জল ঢুকে যাওয়ায় চাষের মাছ, নদীর জলে মিশে গেছে। জলের তোড়ে ৩০ টিরও বেশি পোলট্রি ফার্মে ১০ লক্ষ টাকারও বেশি মুরগি মারা গিয়েছে। চাষের খেতও জলের নিচে।

এই অবস্থায় ব্যাঙ্ক ঋণ কীভাবে মেটানো হবে তাও সৌরভের কাছে জানতে চান বাসিন্দারা। রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন ‘‘মান্তাদাড়ি, বারোপেটিয়া থেকে জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়ি শহরে মাছ, শাক সবজির জোগান যায়। বন্যায় সবই দেখছি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে।’’ জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের তরফে বিশেষ প্রকল্পের মাধ্যমে সাহায্য করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rain flood malbazar teesta sabyasachi ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE