বাড়িতে চড়াও হয়ে দুই কিশোর সহ একই পরিবারের চার জনকে অপহরণের অভিযোগকে ঘিরে তেতে উঠেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের নিউ সাদলিচক এলাকা। তৃণমূল আশ্রিত এক দুষ্কৃতীর নেতৃত্বে ওই চার জনকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস।
শনিবার গভীর রাতে ওই ঘটনার পর রবিবার বিকেলে পুলিশ দুজনকে উদ্ধার করেছে। কিন্তু ওই দুজনকে উদ্ধার করে কুমেদপুর ফাঁড়িতে নিয়ে আসার পর সেখানেও দলবল নিয়ে চড়াও হয়ে ওই দুষ্কৃতী তাদের ফের তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। এক কিশোর-সহ বাকি দুজনের হদিশ অবশ্য এখনও মেলেনি। যে দুজনকে উদ্ধার করা হয়েছে তাদের দুষ্কৃতীরা বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। তাদের হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
তৃণমূল আশ্রিত হওয়ায় দোর্দন্ডপ্রতাপ ওই দুষ্কৃতী এলাকায় তোলাবাজি, অপহরণ করে টাকা আদায় থেকে শুরু করে নানা অসামাজিক কাজকর্ম চালালেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় বলে অভিযোগ। কী কারণে ওই চার জনকে অপহরণ করা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তৃণমূল অবশ্য আসরাফুল হক নামে ওই দুষ্কৃতীর সঙ্গে দলের কোনও যোগাযোগ নেই বলে দাবি করেছে।
চাঁচলের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দুপুরে অভিযোগ পেয়েই দুজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি দুজনেরও খোঁজ চলছে। পাশাপাশি ঘটনায় অভিযুক্তদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে।’’
পুলিশ ও অপহৃতদের পরিজনদের সূত্রে জানা যায়, শনিবার গভীর রাতে ওই দুষ্কৃতী দলবল নিয়ে নিউ সাদলিচক এলাকা থেকে চার জনকে অপহরণ করে। সঙ্গে ছিল আরও জনা কুড়ি দুষ্কৃতী।
বাড়িতে ঢুকে বন্দুক দেখিয়ে আব্দুর রশিদ, ভাই বাদিরুদ্দিন সহ তাদের দুই ভাইপো সাবিকুল ইসলাম ও আনারুল হককে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অভিযুক্তর বাড়ি কুমেদপুর তালগ্রামহাট এলাকায়। বিকেলে অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে আব্দুর রশিদ ও বাদিরুদ্দিনকে পুলিশ উদ্ধার করলেও বাকি দুই কিশোরের হদিশ সন্ধে পর্যন্ত মেলেনি।
কুমেদপুর তালগ্রাম হাট জেলার অন্যতম বড় হাট। একেবারে বিহার ঘেঁষা ওই এলাকায় তোলাবাজি থেকে শুরু করে নানা অসামাজিক কাজে অভ্যস্ত ওই দুষ্কৃতী। বাইক চুরি বা ছিনতাই করে টাকা আদায় বা অপহরণ করে টাকা আদায়ের মতো অভিযোগও তার বিরুদ্ধে রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভয়ে বাসিন্দারা তার নামে অভিযোগ জানাতে সাহস পান না। পুলিশকেও পরোয়া করেন না।
অপহৃতদের উদ্ধারে উদ্যোগী হন হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক মোস্তাক আলম। তিনি বলেন, ‘‘শাসকদলের আশ্রিত হওয়ায় পুলিশও ওই দুষ্কৃতীকে ধরছে না। আন্দোলন হবে।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন অবশ্য সাফ জানান, দুষ্কৃতীদের সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশ আইন মেনেই ব্যবস্থা নেবে।