Advertisement
E-Paper

বিয়ে শুরু হতেই হাজির পুলিশ

পাত্রকে নিয়ে বরযাত্রীরা সকাল ১০টার মধ্যেই পৌঁছে গিয়েছিল পাত্রীর বাড়ি। তখন পাত্রীর বাড়িতে বিয়ের তোড়জোড় তুঙ্গে। আত্মীয়-স্বজন ও পড়শিদের ভিড়ে বাড়ি গমগম করছে। মাছ-মাংস রান্নাও শুরু হয়ে গিয়েছে জোরকদমে। বিয়ে ছিল বেলা ১২টায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৭ ০১:৫৭

পাত্রকে নিয়ে বরযাত্রীরা সকাল ১০টার মধ্যেই পৌঁছে গিয়েছিল পাত্রীর বাড়ি। তখন পাত্রীর বাড়িতে বিয়ের তোড়জোড় তুঙ্গে। আত্মীয়-স্বজন ও পড়শিদের ভিড়ে বাড়ি গমগম করছে। মাছ-মাংস রান্নাও শুরু হয়ে গিয়েছে জোরকদমে। বিয়ে ছিল বেলা ১২টায়। তার পর কব্জি ডুবিয়ে খেয়ে নববধূকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পরিকল্পনা ছিল পাত্রপক্ষের। কিন্তু বেলা ১১টা নাগাদ হঠাৎই বিয়েবাড়িতে পুলিশ! আর তাতেই বাধল বিপত্তি।

বিয়েবাড়িতে আচমকা পুলিশ কেন? কারণটা শোনা গেল তাদের মুখ থেকেই— যার বিয়ে, সেই পাত্রী নাবালিকা বলে থানায় অভিযোগ হয়েছে। বলা হয়েছে, মেয়ের বয়েস মোটে ১৬। তাই এই বিয়ে সম্ভব নয়।

শুধু বিয়ে বন্ধ করে দেওয়াই নয়, ১৮ বছর বয়েস হওয়ার আগে মেয়ের বিয়ে দিতে পারবেন না বলে বাবার কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করে নিয়ে যায় পুলিশ।

ফলে বিয়ের যাবতীয় অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেলেও এ দিন খালি হাতেই ফিরতে হল পাত্রপক্ষকে। এমনকী, যে চর্বচুষ্য রান্না হয়েছিল, তা কব্জি ডুবিয়ে খাওয়াও হল না তাঁদের। শনিবার এই ঘটনা কালিয়াচক ২ ব্লকের রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের জোতমনসা গ্রামের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জোতমনসা গ্রামের বাসিন্দা মোথাবাড়ি হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীর সঙ্গে পুরাতন মালদহ ব্লকের বলাতুলি গ্রামের এক যুবকের বিয়ে ছিল এ দিন। মোথাবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ওসি রামপ্রসাদ চাকলাদার বলেন, ‘‘আমরা এ দিন সকালে খবর পাই যে, জোতমনসা গ্রামে নাবালিকাকে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার পরেই পুলিশ সেখানে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেয়।’’

বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ নিয়ে জেলা জুড়ে লাগাতার প্রচার সত্ত্বেও কালিয়াচক-২ ব্লক-সহ জেলার অনেক জায়গাতেই নাবালিকার বিয়ে দেওয়ার প্রবণতায় প্রশাসনের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ দিনের সংশ্লিষ্ট রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান নাসিমা বানু বলেন, ‘‘আমরা গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে মিটিং করে এলাকায় নাবালিকার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে আগাম খবর পঞ্চায়েত দফতরে বা পুলিশকে জানাতে বলেছি।’’ কিন্তু কোথাও যে ফাঁক থেকে যাচ্ছে, সেটা তিনিও মেনে নিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, শেষ মুহূর্তে বিয়ে বন্ধ হলে মেয়েটির পরিবারের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। আগাম খবর পেলে বিয়ে বন্ধ করার পাশাপাশি এই আর্থিক ক্ষতি রোখা যায়। মালদহ জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক অশোক পোদ্দার বলেন, ‘‘বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে নজরদারি জেলায় যাতে আরও বাড়ানো যায় সে চেষ্টা অবশ্যই করা হবে।’’

Minor Girl Marriage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy