মালদহে দুর্গাপুজো চলাকালীন মণ্ডপ থেকে সোনার গহনা চুরির অভিযোগ উঠল সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার, অষ্টমীর রাতে মালদহের গাজোলে একলাখি গান্ধীমোড় সর্বজনীন দুর্গাপুজোর মণ্ডপ থেকে দেবী প্রতিমার সোনার গহনা চুরি হয়ে যায় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় দুই সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন পুজোর উদ্যোক্তারা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে এফআইআর রুজু করে তদন্তও শুরু করেছে পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
সোনার গহনা চুরির বিষয়টি প্রথম নজরে আসে নবমীর সকালে। পুজোর উদ্যোক্তারা জানান, নবমীর সকালে পুরোহিত পুজোর প্রস্তুতির সময় দেখতে পান প্রতিমার সোনার গহনা নেই। বিষয়টি নজরে আসার পরেই মণ্ডপে বসানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেন উদ্যোক্তারা। ওই সিসি ক্যামেরার ফুটেজেই দেখা যায় দুই সিভিক ভলান্টিয়ার এবং এক স্থানীয় বাসিন্দাকে প্রতিমার কাছে ঘোরাঘুরি করছেন। সেখানে কিছু জিনিস নাড়াচাড়া করতেও দেখা যায় তাঁদের। বিষয়টি নজরে আসার পরেই অধীর মণ্ডল নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা এবং দুই সিভিক ভলান্টিয়ার— সঞ্জয় মণ্ডল এবং গৌর মণ্ডলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানান পুজোর উদ্যোক্তারা। তাঁদের দাবি, প্রায় ৩ লক্ষ টাকার সোনার গহনা চুরি হয়ে গিয়েছে।
নবমীতে ওই অভিযোগ পাওয়ার পরেই স্থানীয় থানার পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছোন। অভিযুক্ত দুই সিভিক ভলান্টিয়ার এবং স্থানীয় ওই বাসিন্দাকে সেখান থেকে নিয়ে যান পুলিশকর্মীরা। পরে শুক্রবার মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব জানান, ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে এফআইআর রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে। অভিযুক্ত তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে, তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
আরও পড়ুন:
পুলিশ সুপার জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে স্থানীয় ওই বাসিন্দা নিজেকে তান্ত্রিক বলে নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাছে। ওই দুই সিভিক ভলান্টিয়ারই চাকরির জন্য পড়াশোনা করছিলেন। তান্ত্রিকের পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি সিভিক ভলান্টিয়ারদের বলেছিলেন, তাঁর কথা শুনলে পরীক্ষায় সফল হয়ে যাবেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। সেই কথা শুনে প্রতিমার সামনে থেকে সিঁদুর এবং ফুল নিয়েছেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। প্রাথমিক ভাবে তদন্তে উঠে এসেছে, সিভিক ভলান্টিয়ারেরা সিঁদুর এবং ফুলই সংগ্রহ করেছিলেন। তান্ত্রিকের পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির বয়ানে কিছু ক্ষেত্রে অসঙ্গতি ধরা পড়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার। তাই তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাশাপাশি সিসি ক্যামেরাটি কিছুটা দূরে বসানো ছিল। ফলে সেটি থেকে নির্দিষ্ট ভাবে বোঝা যাচ্ছে না, প্রতিমার সামনে থেকে কে, কী তুলেছেন। এ ছাড়া অষ্টমীর রাতে আরও কে কে মণ্ডপে এসেছিলেন, তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার।